নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের এনএপিসি-৩ পাওয়ার কোম্পানিতে চীনা নাগরিকদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে ডাকাতির ঘটনায় ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে পিরোজপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার পরদিন আলী আক্কাস ও রেহাজউদ্দিন নামের দুই ডাকাতকে মহাসড়কে ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায় গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এই দুজনকেও এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে বলে সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আহসানউল্লাহ নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পিরোজপুর গ্রামের রহমান মিয়ার ছেলে রবিন ও তার ভাড়াটিয়া ইমরান। গ্রেফতারকৃত ডাকাত চাপাতি ফারুক সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তাদের নাম প্রকাশ করে।
তারা সবাই এ ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে নিশ্চিত করে।
জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর আগমন সিএনজি পাম্প সংলগ্ন জমি ভাড়া নিয়ে পিরোজপুর গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে মোজাম্মেল হক এনএপিসি-৩ পাওয়ার কোম্পানি ইয়ার্ড গড়ে তোলেন। সেখানে চারজন চীনা নাগরিক ও একজন দোভাষীসহ ১২ জন কর্মরত রয়েছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ১০-১২ জনের ডাকাত দল ওই ইয়ার্ডে হামলা করে। একপর্যায়ে ডাকাতরা চীনা নাগরিকসহ সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে একটি কক্ষে নিয়ে যায়। ডাকাতরা চীনা নাগরিক সুপারভাইজার উগং, লিও জাইকিং, সং কিজুং, দোভাষী গোলাম আজম ও গাড়িচালক তরিকুলকে পিটিয়ে আহত করে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, ইউএস ডলার ও মোবাইল ফোনসহ ১১ লাখ টাকার মালপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় ডাকাতরা চীনা নাগরিক সুপারভাইজার উগংয়ের হাতের ঘড়ি নিতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এসময় উগং ও দোভাষী গোলাম আজমকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরদিন এনএপিসি-৩ পাওয়ার কোম্পানির ইয়ার্ড মালিক মোজাম্মেল হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকায় প্রথমে পিরোজপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে চাপাতি ফারুককে গত রোববার রাতে গ্রেফতার করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠায় পুলিশ। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ফারুক সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে গ্রেফতারকৃতদের নাম প্রকাশ করে।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আহসাউল্লাহ বলেন, চীনা নাগরিকদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে ডাকাতির ঘটনায় আরও চার ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার পরদিন দুইজনকে মহাসড়কে ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায় ইতোমধ্যে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুজনকে মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।