মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় ছুটি ছাড়াই মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ উঠেছে ১৪৫নং পশ্চিম শশিকর ওয়াপদার পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তমা রায়ের বিরুদ্ধে। প্রায় ছয় মাস ধরে তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ সচেতন মহল ও স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ থেকে তমা রায় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। এতে এক দিকে বিদ্যালয়টি শিক্ষক সংকটে ভুগছে। অন্যদিকে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। বিদ্যালয়টিতে মোট পাঁচজন শিক্ষক রয়েছে। প্রধান শিক্ষিকা অনুপস্থিত, সহকারী এক শিক্ষিকা চিকিৎসাজনিত কারণে ছুটিতে আছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে তিনজন শিক্ষক দ্বারা পাঠদান কর্যক্রম চলছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই শতাধিক।
স্থানীয়রা জানান, পাঁচজন শিক্ষকের দুইজন ছুটিতে। তিনজন শিক্ষক দিয়ে কীভাবে ক্লাস হয়। শিক্ষার্থীরা কীভাবে লেখাপড়া শিখবে এই স্কুল থেকে। এভাবে যদি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনুপস্থিত থাকেন তাহলে শিশুদের ভবিষ্যৎ একেবারেই নষ্ট হয়ে যাবে।
এদিকে প্রধান শিক্ষিকা তমা রায়ের বাড়ি উপজেলার মধ্য ডাসার এলাকায় গিয়ে তাকে ও তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে এলাকাবাসী বলছে- তমা রায় ও তার পরিবার সবাই বসবাসের জন্য বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ২৩ মার্চ চিকিৎসার কথা বলে চলে যাওয়ার পর থেকে আমাদের প্রধান শিক্ষিকা আর স্কুলে আসেননি। তিনি কোনো ছুটির দরখাস্তও করেননি। মুঠোফোনে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়ে তার মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপে চেষ্টা করেও কোনো সাড়া মেলেনি।
তিনি আরও বলেন, ওই শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনিও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না। এ বিষয়ে আমরা শিক্ষা অফিসকে জানিয়েছি। তারা আমাদেরকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
সহকারী শিক্ষিকা বিমালা ঘটক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এভাবে আমাদের প্রধান শিক্ষকের নিরুদ্দেশ হওয়াটা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমাদের বিদ্যালয় শিক্ষক সংকটে ভুগছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও অফিশিয়াল কার্যক্রম আমরা যথাযথভাবে করতে পারছি না। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বিদ্যালয়টি বেশ কয়েকবার পরিদর্শন করেছি এবং এখন পর্যন্ত তিনটি শোকজ পাঠিয়েছি। এখন আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ বিষয়ে ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমীন ইয়াছমীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধান শিক্ষিকার অনুপস্থিতির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।