প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পটি স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
রোববার (২৪ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সবসময় স্বচ্ছতার সঙ্গে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প ব্যয়ে তৃতীয় ধাপে প্রতিটি ঘরে ব্যয় হচ্ছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। ভ্যাট-ট্যাক্স ধরা হলে এ ব্যয় দাঁড়াত ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, এখন যে ঘরগুলো আমরা নির্মাণ করছি সেগুলো অনেক টেকসই। আমাকে অনেক ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন চাইলে এর ওপর দোতালাও করা যাবে। ফাউন্ডেশন, আরসিসি পিলার, গ্রেড বিম সবকিছু যুক্ত করা হয়েছে।
আগামী ২৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে দেশের চারটি উলজেলায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গৃহহীন মানুষের হাতে উপহারের এসব ঘর হস্তান্তর করবেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, এই পর্যায়ে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ঈদের আগে উপহারের ঘরে উঠবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওইদিন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের পোড়াদিয়া বালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের খোকশাবাড়ী আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের হাজিগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরাসরি গণভবন থেকে যুক্ত হবেন।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঘোষণা দিয়েছেন যে, বাংলাদেশের কোনো মানুষ যাতে ভূমিহীন গৃহহীন না থাকে। সেজন্য তিনি দুই শতক জমির উপর দুই রুমের একটি ঘর উপহার দিচ্ছেন। এসব ঘরের ডিজাইন প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রণয়ন করেছেন।
সিনিয়র সচিব আরও জানান, এই যে ঘর দেওয়া হচ্ছে এগুলো স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে দেওয়া হচ্ছে। যার স্বামী নেই সেক্ষেত্রে স্ত্রীর নামে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যে প্রায় ৩৩ হাজার ঘর হস্তান্তর করবেন তাতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ যাদের একটি ঠিকানা ছিল না, দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না, তারা একদিনে আশ্রয় পাবে।
তিনি জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে একক ঘর নির্মাণের জন্য ৩ হাজার ৯৭২ কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার ১ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এজন্য সারাদেশে ৫ হাজার ৫১২ দশমিক ৪ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২ হাজার ৯৬৭ কোটি ৯ লাখ টাকা। এছাড়াও সরকার ১৬৮ দশমিক ৩২ একর জমি কিনেছে। যার বাজার মূল্য ১১৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। দুই দফায় ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। তৃতীয় দফায় ৬৫ হাজার ৬৭৪টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘরের দলিল আগামী ২৬ এপ্রিল গৃহহীনদের মাঝে তুলে দেওয়া হবে। এই প্রকল্পটি সরাসরি তত্ত্বাবধান করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান।