শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন

সোনারগাঁয়ে নিখোঁজের ৮ দিন পর ফয়সাল নামে এক কিশোরের লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার-২

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ১০.১৯ পিএম
  • ৪৩৭ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নিখোঁজের ৮দিন পর ডোবা থেকে ফয়সাল আহমেদ (১৭) নামে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১১ এর একটি দল। হত্যাকান্ডে জড়িত অপূর্ব চন্দ্র দাস ও তপু চন্দ্র দাস ওরফে অপু নামের দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল ও শুক্রবার সকালে পৃথকভাবে তাদের সোনারগাঁ পৌর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। অপূর্ব চন্দ্র দাস পৌরসভার বাগমুছা ঋষিপাড়া গ্রামের তপন চন্দ্র দাসের ছেলে ও তপু একই এলাকার নিতাই চন্দ্র দাসের ছেলে। হত্যাকারীর তথ্যানুযায়ী বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৪ টার দিকে বাগমুছা ঋষিপাড়া এলাকার একটি ডোবা থেকে নিখোঁজ ফয়সালের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ফয়সাল লাহাপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।
র‌্যাব-১১ এর প্রধান নির্বাহী লেফটেন্যান্ট কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে পূর্ব শত্রæতার জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে আসামী অপূর্ব। গত ২৬ জানুয়ারি রাত ৯ টার দিকে পার্শ্ববর্তী লাহাপাড়া গ্রামের মামার বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেনি ফয়সাল আহমেদ। নিখোঁজের পর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজাখুজির পর না পেয়ে গত ২৮ জানুয়ারী তার মামা মোঃ মানিক বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। সাধারণ ডায়েরীর সূত্র ধরে পরবর্তীতে র‌্যাব-১১ এর গোয়েন্দা দল নিখোঁজ ফয়সালের সন্ধানে ছায়া তদন্তে নামেন। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে ডেকে আনা আসামী অপূর্ব চন্দ্র দাসকে শনাক্ত করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে র‌্যাব সদস্যরা সোনারগাঁ পৌর এলাকা থেকে অপূর্ব চন্দ্র দাসকে গ্রেফতার করে। অপূর্বের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে অপর আসামী তপু চন্দ্র দাস ওরফে অপুকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তিনি আরো জানান, র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত অপূর্ব নিখোঁজ ফয়সালকে নীল রঙের রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ পার্শ্ববর্তী ডোবায় ফেলে রাখার কথা স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৪ টার দিকে বাগমুছা এলাকায় একটি ডোবায় লাশ সনাক্ত করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এ হত্যাকান্ডটি পূর্ব-পরিকল্পিত। পূর্ব শত্রæতার জের ধরে তারা এ হত্যাকান্ডটি ঘটায়। আসামিরা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। গত ২৬ জানুয়ারি রাতে আসামি অপূর্ব চন্দ্র দাস ফোনে নিখোঁজ ফয়সালকে তার সাথে দেখা করতে বলে। পরবর্তীতে ফয়সাল অপূর্বের সাথে দেখা করতে গেলে অপূর্ব ফয়সালকে জরুরী কথা আছে বলে তার বাড়ির পাশে থাকা উচু ভিটায় নিয়ে যায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার সাথে কথা বলার এক ফাঁকে আসামি অপূর্ব তার হাতে থাকা দড়ি দিয়ে ফয়সালের গলা প্যাঁচিয়ে ধরে ও তার বুকের ওপর ওঠে বসে। এসময় ফয়সাল চিৎকারের চেষ্টা করলে অপর আসামি অপু ফয়সালের পাঁ দড়ি দিয়ে বেঁধে মুখ চেপে ধরে। পরবর্তীতে মৃত্যু নিশ্চিত হলে তারা দু’জনে মিলে মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে পরস্পরের সহায়তায় তাদের বাড়ির অদূরে ঝোপের মধ্যে থাকা একটি ডোবায় কচুরীপানার নিচে লাশ ডুবিয়ে রাখে।
এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানায় র‌্যাব। অত্র হত্যাকান্ডের সাথে আরো কেউ যুক্ত আছে কিনা তা আরো অধিকতর তদন্তে জানা যাবে। আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
র‍্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন ও শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়াও যেকোন চা ল্যকর মামলার রহস্য উদ্ঘাটনের জ ছায়া তদন্ত করে আসছে। গত ২৬ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে রাত আনুমানিক ০৯.৩০ ঘটিকায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ হতে ফয়সাল আহম্মেদ(১৭) নামের এক কিশোর নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের দুই দিন পরও তাকে পাওয়া না গেলে নিখোঁজের মামা মোঃ সোনারগাঁ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন, যার নম্বর ১৪১৯ তারিখ ২৮/০১/২০২২।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ নিখোঁজের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort