হুমায়ূন কবিরঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের মুছারচর ও চরতালিমাবাদ গ্রাম এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ে মাত্রাতিরিক্ত বালু উত্তোলন করায় কৃষকের কৃষি জমি ভেঙ্গে নদে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েক মাস ধরে সেনাবাহিনীর নাম করে মাত্রাতিরিক্ত বালু উত্তোলনের করায় ওই এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক কৃষকের ফসলী জমি ভেঙ্গে নদে চলে গেছে। বর্তমানে আরো জমি নদে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফসলী জমি রক্ষায় রোববারেওই এলাকার প্রায় ২ শতাধিক কৃষক গণ স্বাক্ষর দিয়ে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে স্বারকলিপি প্রদান করেছেন।
কৃষকরা জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদে দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীর দেওয়া সীমানা অতিক্রম করে একই স্থানে থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে লেদামদী গ্রামের আবুল হাসেম রতনের নেতৃত্বে ২০-৩০ জনের একটি সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের বালু উত্তোলনের ফলে ওই এলাকার ২ একর ফসলী জমি নদে গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়াও গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে নদীতে চলে যায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ সিন্ডিকেট সেনাবাহিনীর নাম করে বিভিন্ন কৃষককে মামলা ও হামলার হুমকি দিয়ে আসছে। এতে করে ওই এলাকার সাধারণ কৃষক নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
চরতালিমাবাদ গ্রামের কৃষক নুরু মিয়া জানান, নদী ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন আছে। সেনাবাহিনী ১০-১৫ ফুট বালু উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছেন। এ সিন্ডিকেট নির্দিষ্ট সীমানা অতিক্রম করে প্রায় ৬০-৬৫ ফুট গভীর করে বালু উত্তোলন করায় কৃষি জমি ভেঙ্গে নদীতে চলে যাচ্ছে। কৃষি জমি রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মুছারচর গ্রামের কৃষক ফিরোজ মিয়া জানান, নদী ড্রেজিংয়ে সব জায়গা থেকে মাটি কাটতে হবে। বালু উত্তোলনের সিন্ডিকেট ১৫-২০ দিন ধরে একই স্থান থেকে গভীর ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে কৃষি জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে। কৃষকদের জমি রক্ষায় প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলন করা হবে।
এ বিষয়ে দৈনিক বাংলাদেশ সময় থেকে তার সাথে যোগাযোগ করলে।
অভিযুক্ত আবুল হাসেম রতন বলেন, বালু উত্তোলনের সঙ্গে আমি জড়িত না। তবে এলাকার লোকজন সিন্ডিকেট করে এ কাজ করছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমার সু-সম্পর্ক রয়েছে। তাই সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কাজটি এনে দিয়েছি। কৃষি জমি ভাঙ্গনের বিষয়ে আমার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা যোগাযোগ করেছেন । এগুলো বাঁশ ও বেড়া দিয়ে বালু ভরাট করে ঠিক করে দেওয়া হবে।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.আতিকুল ইসলাম বাংলাদেশ সময়কে বলেন, অপরিকল্পিত বালু উত্তোনের ফলে কৃষকের ক্ষতি হবে এমন কাজ করতে দেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে কথা বলেছি। বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হবে।