মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

সেই লিপি খান ভরসা কারাগারে

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ১০.৫৫ এএম
  • ১ বার পড়া হয়েছে

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা চেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার লিপি খান ভরসার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (১৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টায় রংপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক শোয়েবুর রহমান এই আদেশ দেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সুদীপ্ত শাহীন কঠোর পুলিশ নিরাপত্তায় তাকে আদালতে উপস্থিত করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, অর্থ জোগান ও সংঘটিত করার অভিযোগের তদন্তের জন্য তার জামিন না মঞ্জুরের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে লিপি খান ভরসাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে আদালতে নেওয়ার সময় লিপি খান ভরসা নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাকে এই মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমার জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে কামরুল ভরসা মিথ্যা ঘটনার সাথে জড়িয়ে আমাকে আসামি বানিয়েছে। আমি এসবের সঙ্গে জড়িত না।

এর আগে রোববার (১৬ মার্চ) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর গুলশান-২ এর ১১৭ নম্বর রোডের ৯/বি ফ্লাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুর থেকে তাকে সেখানে নজরবন্দি করে রাখা হয়েছিল। পরে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে দরজা ভেঙে গ্রেপ্তার করা হয়।

লিপি খান ভরসা গেল বছর ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে আহত রংপুর মহানগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুনের করা হত্যা চেষ্টা মামলার ১৭৯ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি ঢাকায় অভিজাত ওই এলাকায় ফ্লাট ভাড়া নিয়ে স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছিলেন।

লিপি খান রংপুরের ধর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী করিম উদ্দিন ভরসার পুত্রবধূ। তিনি এসএল ভরসা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সেরা করদাতা। তিনি সবশেষ ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসির নির্বাচনী সভা-সমাবেশে অংশ নেন। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতাদের ম্যানেজ করে দলীয় প্রভাবে জমি দখল করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই বিকেলে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় থেকে আন্দোলনকারীরা একটি মিছিল নিয়ে সিটি বাজারের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে অনেকেই আহত হন। এ ঘটনায় গত বছর ১৩ নভেম্বর মহানগর কোতোয়ালি থানায় গুলিবিদ্ধ মামুনুর রশিদ মামুন বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। তিনি এ মামলার এজাহারভুক্ত ১৭৯ নম্বর আসামি।

এর আগে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক (সদ্য প্রত্যাহার) উপকমিশনার মোহাম্মদ শিবলী কায়সারের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ তোলেন তিনি। তার দাবি, গত ১৩ নভেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মামলায় আসামি হন তিনি। এ মামলা থেকে নাম বাদ দিয়ে তাকে সুরক্ষা দিতে মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক ব্যবসায়ী অমিত বণিকের মাধ্যমে তার কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ চান উপকমিশনার শিবলী কায়সার। এ ঘটনায় গত ১১ মার্চ শিবলী কায়সারের বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তর, মহানগর পুলিশ কমিশনার ও সেনাবাহিনীর কাছে লিপি খান লিখিত অভিযোগ করেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে লিপি খান ভরসা তার ম্যানেজার পলাশ হাসানকে কোতোয়ালি থানায় পাঠান। এ সময় শিবলী কায়সার মামলার বাদী ম্যানেজার পলাশকে থানার ভেতরেই বেধড়ক মারধর করে একপর্যায়ে তাকে গুলি করতে সহকর্মীর কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করেন। এ ঘটনায় শনিবার (১৫ মার্চ) তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে নেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort