নারায়ণগঞ্জে আদালত পাড়ায় প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত আলোচিত প্রতারক ফেরদৌসি আক্তার রেহেনার জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী এড. মাহফুজ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নূর মহসিন এর আদালতে রেহেনার জামিন চাইলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়ে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। ফেরদৌসি আক্তার রেহেনা ফতুল্লা সস্তাপুর এলাকার বাসিন্দা।
গত বুধবার (৭ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় নিজেকে আইনজীবী পরিচয়ে এক নারীর সাথে প্রতারণাসহ ওই নারীকে চড় মারার অভিযোগে রেহেনাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের শুনানির পরে ফেরদৌসি আক্তার রেহেনাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর এড. সুইটি ইয়াসমিন।
তিনি আরোও জানান, বিভিন্ন সময় রেহেনা নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতো। আমরা শুনেছিলাম আজ হাতে নাতে পেয়েছি সে নিজেকে আইনজীবী পরিচয়ে একজন নারীর সাথে প্রতারণা করেছে। ওই নারী প্রতিবাদ করায় চড় মেরেছে।
এ ঘটনায় এড. সুইটি ইয়াসমিন এর ব্যাক্তিগত ফেইজবুকে এক স্টাটাসে লিখেছেন- কি সুন্দর ফুটফুটে বাচ্চাটা ওরা বিনা মুল্যে আইনী সহায়তার জন্য নারায়নগঞ্জ লিগ্যাল এইড অফিসে আসলে, লিগ্যাল এইড স্যার আমাকে মামলা টি পরিচালনা করার জন্য বললে, আমি একটি যৌতুক আইনের ৩ ধারায় সি আর মামলা বিজ্ঞ আদালতে দায়ের করি..বিজ্ঞ আদালত সন্তুষ্ট হয়ে আসামীর প্রতি ওয়ারেন্টের আদেশ দান করেন এতেই বিপত্তি ঘটে বাদীনির।
এসেই শিকার হলো ভুয়া আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দানকারী একজন প্রতারক মহিলার, যে কিনা আমার বাদিনীর কে প্রকাশ্যে মারধর করে…অসহায় গরীব মানুষকে ও ছাড় দেন না এই মহিলা, উনি একজন ভুয়া প্রতারক মহিলা ..এটাই হলো প্রকৃত ঘটনা।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. হাসান ফেরদৌস জুয়েল এবং সাধারণ সম্পাদক রবিউল আমিন রনি আদালত পাড়ায় টাউট ও প্রতারক সরাতে কাজ করে যাচ্ছে। এ খবর জানতে পেরে উানারা এসে সহযোগীতা করায় আজ আর পালাতে পারেনি।
পরে লিগ্যাল অ্যাডের জজ স্যার নিজে পুলিশ কল করলে সি এস আই জেলার বড় অফিসার আসাদ সাহের ৫৪ ধারায় এ জেলে পাঠিয়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এরআগেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর কারণে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলায় অভিযুক্তও হয়েছেন রেহানা। এছাড়াও রেহেনার অন্যতম সহযোগী বহুমুখী প্রতারণার মূলহোতা প্রদীপ চন্দ্র বর্মণ (৩৫) সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই বের হতে শুরু করে থলের বিড়াল।
নিজেকে আলোচনায় আনতে গিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আসামীও হয়েছেন রেহানা। তাছাড়া রেহেনার বিরুদ্ধে ধর্মগঞ্জের হাবিব নামে এক ব্যক্তিকে নারী দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করারও অভিযোগ রয়েছে। ওই সময় তার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৩১ হাজার ২০০ টাকা ও মোবাইল সেট। মোটকথা বহুরূপী এক প্রতারক হচ্ছেন ফেরদৌসি আক্তার রেহেনা।