বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৩ অপরাহ্ন

সিরিয়ায় আসাদ আমলের গণকবরে ১ লাখ মরদেহ

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১.৩৫ এএম
  • ০ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন ‘সিরিয়ান এমার্জেন্সি টাস্ক ফোর্স’-এর প্রধান মুয়াজ মোস্তফা জানিয়েছেন, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের বাইরে একটি গণকবরেই অন্তত এক লাখ মানুষের মরদেহ পাওয়া গেছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের শাসনামলে এসব মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

গত ৮ ডিসেম্বর সিরীয় বিদ্রোহীদের ঝড়ো অভিযানের মুখে আসাদ সরকারের পতন হয়। আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপরই সিরিয়ায় গিয়ে সাংবাদিকদের গণকবরের সন্ধান দিলেন ‘সিরিয়ান এমার্জেন্সি টাস্ক ফোর্স’-এর প্রধান মুয়াজ মোস্তফা। তিনি বলেন, দামেস্ক থেকে ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল) উত্তরে আল কুতেইফাহ এলাকায় গণকবরটি পাওয়া গেছে।

গত কয়েক বছরে এলাকাটিতে যে পাঁচটি গণকবরের সন্ধান তিনি পেয়েছেন, এটি তারই একটি। মোস্তফার হিসাবমতে, এই গণকবরে কম করে হলেও অন্তত এক লাখ মানুষকে পুঁতে ফেলা হয়েছে। তবে সিরিয়ায় পাঁচটি ছাড়াও আরও অনেক গণকবর আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব গণকবরে নির্যাতনের শিকার সিরীয় নাগরিকরা ছাড়াও বিদেশিরা আছে।

আল-জাজিরা জানায়, ২০১১ সাল থেকে হাজার হাজার সিরীয় নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। কারণ, সে সময় সিরিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ দমাতে খড়্গহস্ত হয়েছিলেন বাশার আল আসাদ। সেই বিক্ষোভ আর শক্তি প্রয়োগ করে আসাদের তা দমনের অভিযান পরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। বাশার আল আসাদের বাবা হাফিজ আল আসাদ দীর্ঘদিন সিরিয়া শাসন করেছিলেন। ২০০০ সালের বাবার মৃত্যুর পর প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন বাশার আল আসাদ। তিনিও দীর্ঘ ২৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন।

বাশার আল আসাদের পতন ও তার রাশিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার পরপরই সিরিয়ায় ছুটে যান মোস্তফা। আল কুতায়ফাহ গণকবরে দাঁড়িয়ে যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ফোর নিউজকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি। পরে সেখান থেকেই রয়টার্সের সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন। মোস্তফা জানান, বাশার আল আসাদের গোয়েন্দা বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মরদেহ সামরিক হাসপাতালগুলোয় সংগ্রহ করা হতো। পরে যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে সেসব মরদেহ নেওয়া হতো গণকবরে। এই কাজের দায়িত্বভার ছিল সিরিয়ার বিমানবাহিনীর হাতে।

মোস্তফা বলেন, আমরা এমন কয়েকজন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হয়েছিলাম, যারা এসব গণকবরে সরাসরি কাজ করেছিলেন। তিনি জানান, তার সংগঠন কবর খোঁড়ার কাজ করা বুলডোজার চালকদের সঙ্গেও কথা বলেছে। পরবর্তী সময়ে তারা হয় নিজেরাই সিরিয়া থেকে পালিয়ে যান, নয়তো আমরা পালাতে সহায়তা করি। বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে বিনাবিচারে মানুষ হত্যা, গণহারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, কারাগারে আটকে রেখে নির্যাতনের মতো গুরুতর অনেক অভিযোগ আছে। তবে আসাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। গণকবরের স্থানগুলো অরক্ষিত পড়ে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুস্তাফা। তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে প্রমাণাদি সংরক্ষণের জন্য গণকবরগুলো সুরক্ষিত রাখা জরুরি।

এ বিষয়ে সিরিয়ায় জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত কোসাই আলদাহহাক তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি। জানুয়ারিতে এই ভূমিকা গ্রহণের সময় আসাদ সরকার ক্ষমতায় ছিল। বর্তমানে সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন বলে গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেছেন তিনি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort