সিরাজগঞ্জে সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ ২২ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে এনায়েতপুর থানা ও রায়গঞ্জ আওয়ামী লীগ অফিসে হামলায় ১৩ পুলিশ সদস্যসহ ১৯ জন মারা গেছেন।
আর যুবদল-ছাত্রদলের তিন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। সব মিলিয়ে এ জেলায় ২২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ সদর, রায়গঞ্জ ও এনায়েতপুরে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
বেলা ১২টা থেকে এনায়েতপুর থানা এলাকায় দিনভর তাণ্ডব চলে। থানায় ঢুকে অগ্নিসংযোগ ও ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থলের আশপাশে কোনো সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারেনি। সাংবাদিক বা ক্যামেরা দেখলেই তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। দিনভর আন্দোলনকারীদের দখলে ছিল এনায়েতপুর থানা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রোববার ১০টায় বিএনপি-জামায়াতসহ ৫ সহস্রাধিক আন্দোলনকারী লাঠি-সোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে এনায়েতপুরের বিভিন্ন রাস্তায় মিছিল করে। একটি সূত্রের দাবি, দুপুর ১টার দিকে এনায়েতপুর থানায় হামলা চালানো হয় এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেখান থেকে ১৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি জানতে গণমাধ্যমকর্মীরা সারাদিন চেষ্টা করলেও কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারেননি। জেলা পুলিশের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক সাংবাদিকদের ১৩ জন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাত ৮টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে এখনো থানার ভেতর ১১টি মরদেহ এবং রাস্তায় দুই পুলিশের মরদেহ পড়ে থাকার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে রাতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হতাহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধারের জন্য থানায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন। পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক বলেন, আমরা খবর পেয়েছি ১৩ পুলিশ মারা গেছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ঘটনাস্থলে আমাদের ফোর্স যাচ্ছে।
এর আগে দুপুরের দিকে রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা হলে সেখানে এক সাংবাদিকসহ ছয় নেতা নিহত হন। ওই ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন, রায়গঞ্জ উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সরওয়ার লিটন, তার ছোট ভাই ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনাত টিটু, উপজেলা আওয়ামী সদস্য ও চান্দাইকোনা ইউপি মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আল আমিন এবং রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক প্রদীপ ভৌমিক।
আহত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিন্নাহ আলমাজি, সহ সভাপতি রহমত আলী, সাইফুল ইসলাম চাঁন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান ইমন, কৃষক লীগ নেতা ফরহাদসহ অন্তত ২০ জন।