সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি বানিজ্য এটা নতুন কথা নয়। ভর্তি বানিজ্যের জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে এ স্কুল। স্বজনপ্রীতি ও অর্থের বিনিময়ে নানা কৌশলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড স্কুলে ভর্তি হয়েছেন অনেকই। তবে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পাওয়ার হাউজে) গত কিছুদিন আগে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন মোঃ দেলোয়ার হোসেন। উনি যোগদান করার পর থেকে সার্বিক বিষয়ে হয়েছে আরো অবনতি। বছর শেষে স্কুলটির ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আয়োজন করা হতো পিকনিক ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান৷ কিন্তু প্রধান প্রকৌশলী যোগদান করার পর এসব সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে করে অভিভাবকরা হয়েছেন ক্ষিপ্ত। শুধু তাই নয় গত বছর প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম থাকাকালিন সময়ে জমজ দুই শিশু কন্যাকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য অভিভাবক তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ভর্তি করাতে পরেননি। পরে প্রধান প্রকৌশলী তাদের সামনের বছর ভর্তি করাবেন বলে আশ্বস্ত করেন। জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরের দিন প্রধান প্রকৌশলী বদলি হয়ে যান। যোগদান করেন মোঃ দেলোয়ার হোসেন। জমজ দুই শিশু ইয়ামা বিনতে করিম ও ইয়ানা বিনতে করিম স্কুলে ভর্তির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন তাদের ভর্তি করাতে গড়িমশি শুরু করেন। জমজ শিশুদের ভর্তি করাতে না পারায় ভর্তির জন্য প্রধান প্রকৌশলীর কাছে গিয়ে বিশেষ ভাবে সুপারিশ করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবু বক্কর সিদ্দিক। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হলো না। পরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম মিল্টনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জমজ শিশুর অভিভাবকরা অভিযোগ বলেন, গত বছর আমার বাচ্চাদের ভর্তির জন্য আবেদন করলে তারা ভর্তি করেনি। বলে এ বছর আমার বাচ্চাদের ভর্তি করাবেন। কিন্তু আগের প্রধান প্রকৌশলী বদলি হয়ে গেছেন। নতুন যিনি আসছেন আমরা অনেক ভাবে বাচ্চাদের ভর্তির জন্য বতর্মান প্রকৌশলীর কাছে অনেক সুপারিশ করিয়েছি কিন্তু উনি ভর্তি করেননি। এ স্কুলে ভর্তি করানোর একমাত্র উদ্দেশ্য এখানে নিরাপত্তার বিষয়টি অনেক ভালো তাই ভর্তি করাতে চেয়েছি। তিনি আরো বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কৌশলে বাচ্চাদের ভর্তি করিয়েছেন। আমার জমজ দুই শিশুদের ভর্তির অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। আমার বাচ্চাদের ভর্তির বিষয়টি বিবেচনার জন্য অনুরোধ করছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক অভিভাবকরা বলেন, এ স্কুলে ভর্তি বানিজ্যের রেকর্ড অনেক আছে। তারা টাকা পেলে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করান। বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন আসার পর থেকেই স্কুলটির আরো অবনতি হয়েছে তাই প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনের বদলি দাবি করছি।
সচেতন মহলের দাবি, স্কুলে ভর্তির জন্য প্রত্যেক বাবা মা চায় একটি সুন্দর ও নিরাপদ স্কুলে ভর্তি করাতে। সম্মানিত ব্যক্তিরা যদি ভর্তি জন্য সুপারিশ করেন তাহলে স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিৎ সেগুলো ভর্তি করানো। স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে স্কুলে ভর্তি না করান সেটা খুব দুঃখজনক।
উক্ত বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আলোচনা কালে বলেন, জমজ দুই শিশু ইয়ামা বিনতে করিম ও ইয়ানা বিনতে করিমের ভর্তির জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ যদি সুপারিশ করে থাকেন তাহলে তাদের ভর্তি করানো উচিৎ ছিলো। কারন থানা পুলিশ আমাদের সবসময় নিরাপত্তা ও সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। ভর্তির সব ক্ষমতা প্রধান প্রকৌশলীর। প্রতি বছর
সিদ্ধিরগঞ্জে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির নামে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
অনিয়ম, স্বজনপ্রীতির করে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কদমতলী এলাকার কয়েকজন অভিভাবকদের অভিযোগ বর্তমানে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ( পাওয়ার হাউজে) বেশীর ভাগ স্টাফ বিভিন্ন জায়গায় বদলি হয়েছে। স্কুলটিতে বিভিন্ন শ্রেনীতে আসন খালি রয়েছে। আসন খালি থাকা সত্ত্বেও আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে পারছিনা। তারা প্রতি বছর ভর্তির আসন সংকট দেখিয়ে কাউকে ভর্তি করায় না। এ স্কুলের হয়রানির এমন অভিযোগ রয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি, পুলিশসহ সরকারী কর্মকর্তারা। তারা বলেন,সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে ভর্তির বিষয়ে সুপারিশ করলে তিনি ভর্তির বিষয়ে দেখবেন বলে জানায়। পরে অভিভাবকরা দেলোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ভর্তি না করাতে বিভিন্ন অজুহাত দেখান। অনেক সময় ভালো স্কুলে ভর্তির জন্য পরিচিত লোকজন আমাদের সহযোগিতা চায়। আমরাও মানবিক বিবেচনায় ও ছাত্র-ছাত্রীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সুপারিশ করি। কিন্তু স্কুলের কর্তৃপক্ষ ভর্তি না করার জন্য আমাদের বিভিন্ন ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করে। পরে আবার শুনি কর্তৃপক্ষ নিজেদের আত্নীয় স্বজনদের ভর্তি করান। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, পাওয়ার হাউজে কাজ না থাকায় ৭০ ভাগ স্টাফকে বিভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়। সে হিসেবে স্কুলটিতে অনেক আসন খালি রয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারনে স্কুলটিতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করাতে গরিমশি করেন কর্তৃপক্ষ। বিগত দিনে এ স্কুলের বিরুদ্ধে ভর্তি বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
স্কুলের দুর্নীতি ও হয়রানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান ভুক্তভোগী অভিভাবকরা সেই সাথে প্রধান প্রকৌশলীর বদলির দাবিও জানান।