সিদ্ধিরগঞ্জে বাউল গান শুনতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন নাসরিন আক্তার (৪০) নামের এক নারী। বৃহস্পতিবার রাতে গান শুনতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরেননি।
শুক্রবার (১৯ মে) সকাল ৯ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার সিমা ড্রাইংয়ের সামনে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নাসরিনের লাশটি পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। লাশের গলায় একটি লাল কাপড় পেঁচানো ছিলো।
পরে পুলিশে খবর দিলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মমিনুল ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। নিহত নাসরীন আক্তার ওই এলাকার আশরাফ দেওয়ানের মেয়ে।
স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে একটি বাউল গানের আসরে গান শুনতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। পরে অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তের কবলে পড়েন তিনি। এসময় দুর্বৃত্তরা ছিনতাই অথবা অন্য কোন উদ্দেশ্যে তাকে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ফেলে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, সীমা ডাইং এলাকায় সপ্তাহে চার থেকে পাঁচদিন রাতে বাউল গানের আসর বসানো হয়। কাদিরিয়া চিশতীয়া বাউল সমিতির ব্যানারে চাঁনমিয়া ও সমুন নামে দুজন ব্যক্তি এ আসর বসায়। প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়াই রাত দশটা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে গানের আসর। আসরে গানের আড়ালে অসামাজিক কার্যকলাপসহ মাদক সেবীদের মিলন মেলা জমে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,শুধু জালকুড়িতেই নয় থানার পাঁচটি এলাকায় রাতে বাউল গানের আসর বসে। প্রতিটি আসরের চিত্র একই বলে জানা গেছে। গত বছরে একটি আসরে একজন বাউল শিল্পি ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। পরে থানা পুলিশ ওই আসরটি বন্ধ করে দেয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোস্তফা লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শুক্রবার সকালে এলাকাবাসী লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানালে আমরা ঘটনাস্থলে এসে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করি। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি।
মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্যে নারায়ণগঞ্জ মর্গে পাঠানো হবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এলাকায় নিয়মিত বাউল গানের আসর বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা থেকে এসব বাউল গানের আসর বসানোর কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি।