সিদ্ধিরগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর বাড়ি রক্ষার্থে আকুল আকুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ওই প্রবাসীর স্ত্রী আয়েশা আক্তার। তার অভিযোগ আপন ভাসুরের শ্বশুর মাহবুব এনামুল হক। প্রবাসী ছোট দুই ভাইয়ের বাড়ি দখলের চক্রান্ত চালিয়ে নানা প্রকার ষড়যন্ত্রসহ বাড়িভাড়া আত্নসাৎ করেছে। এবং নানাভাবে হয়রানী করে আসছে।
এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ, মামলা ও স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে লিখিত অভিযোগ করার পর মাহবুব এনামুল হক আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠেন। প্রতিনিয়ত প্রাননাশের হুমকি দামকি দিয়ে আসছেন এবং তার ছেলেরাও বাসায় গিয়ে ঘরের দরজায় লাথি মেরে আতংক সৃষ্টি করে নানা হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জপুলে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা আক্তার বলেন, তার প্রবাসী স্বামী নূর নবী এবং তার স্বামীর মেঝো ভাই আলমের সম্পদ দখল করে রেখেছে তার বড় ভাসুর নূরুল ইসলামের শশুর মাহবুব এনামুল হক।
তাদের বড় ভাসুর নূরুল ইসলাম তিনিও প্রবাসে ছিলেন। ছোট বেলায় তাদের বাবা আমাদের শশুর মারা যাওয়ায় পরিবারের সব কিছু দেখাশোনা করতেন আমাদের ভাসুরের শশুর মাহবুব এনামুল হক।
২০০৫ সালে তার স্বামীসহ তারা তিন ভাই মিলে পাইনাদী নতুন মহল্লায় ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে। এরপর ২০০৮ সালে জমিতে বাড়ীর নির্মান কাজ আরম্ভ করেন। তার স্বামীসহ সবাই প্রবাসে থাকার কারণে কাজের দেখাশোনা করেন ভাসুরের শ্বশুর মাহবুব এনামুল হক ।
একপর্যায়ে তিনি কাজের স্বার্থে পাওয়ার চাইলে তিনভাই মিলে তাকে পাওয়ার দেন। ওই পাওয়ারের বলে বাড়ির নির্মাণকাজের কথা বলে ২০০৯ সালে মার্কেন্টাইল ব্যাংক এর প্রধান কার্যালয় থেকে ২০ লাখ টাকা ঋণ উত্তলন করেন। ২০১০ সালে বাড়ীর নির্মান কাজ শেষ হওয়ার পরেও ২০১১ সালে পাওয়ার নামার বলে তাদের কোন ভাইকে না জানিয়ে মাহবুব এনামুল হক ব্যাংক থেকে আরও ১০ লাখ টাকার ঋণ গ্রহণ করেন।
এছাড়াও প্রতি মাসে বাড়ি ভাড়া বাবদ ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করলেও নিয়মিত ব্যাংক ঋনের কিস্তি করেন নাই। বিষয়টি সবার অজানা ছিল। ২০১৩ সালে তার স্বামী ও স্বামীর মেজ ভাই নূর আলম বাংলাদেশে আসে এবং মাহবুব এনামুল হক কে ব্যাংকের যাবতীয় হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। একপর্যায়ে তাদের সাথে মাহবুব এনামুল হকের কথা কাটাকাটি হয়। এতে মাহবুব এনামুল হক ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্বামীসহ মেজো ভাই নুর আলমকে সন্ত্রাসী দিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালায়। পরে ২০১৯ সালের মধ্যে ব্যাংক লোন পরিশোধ করার পর সবাইকে বাড়ি বুঝিবো দিবেন বলে জানান মাহবুব এনামুল হক।
এরপরও তিনি বাড়ি বুজিয়ে না দিয়ে তালবাহনা করলে ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ২০১৭ সাল থেকে ব্যাংকের কোনো কিস্তি পরিশোধ করে নাই তিনি। ছয় বছরের বাড়ি ভাড়া প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করে ফেলেন।
বিষয়টি জানতে পেরে তার ভাশুর নুর আলম শুনলে আম মোক্তারটি বাতিল করেন। পরবর্তীতে তারা আদালতে একটি বণ্টনের মামলা (নং-৮২/২১) দায়ের করেন এবং ব্যাংকের টাকা পরিশোধের স্বার্থে বাড়ি ভাড়া আদায়ের জন্য একজন রিসিভার নিয়োগের আবেদন করলে আদালত মার্কেন্টাইল ব্যাংক শিমরাইল শাখার ম্যানেজারকে রিসিভার নিয়োগ করে যাবতীয় দায়িত্ব প্রদান করেন। এরপরও মাহবুব এনামুল হক আদালতের আদেশ অমান্য করে এখনো বাড়ির ভাড়া আদায় করছেন অথচ ঋনের বিপরিতে ব্যাংকের কোনো টাকা জমা দিচ্ছেন না।
এদিকে, তার নামে দেয়া পাওয়ার নামা বাতিল করার পরও সে এখনো এই বাড়িটি নিজের বাড়ি বলে দাবী করছেন এবং নানা প্রপাগাণ্ডা চালাচ্ছেন।
বর্তমানে মাহবুব এনামুল হকের এহেন অমানবিক কর্মকান্ডের কারণে সব কিছু থেকেও তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।