বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নির্ভর করবে দিল্লির রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯.৫৩ এএম
  • ১ বার পড়া হয়েছে

সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য ভারতের কাছে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে, কিন্তু এ বিষয়ে বেশি মন্তব্য করেনি তারা।

 

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি (এক্সট্রাডিশন ট্রিটি) রয়েছে এবং চুক্তির অধীনে শেখ হাসিনাকে চাওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নির্ভর করবে দিল্লির রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর।

এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ‘প্রত্যর্পণ বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এটি বিভিন্ন উপাদানের ওপর নির্ভর করে।’

দুদেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক, প্রত্যর্পণকারী ব্যক্তির গুরুত্ব, সমসাময়িক পরিস্থিতির বিভিন্ন উপাদান প্রত্যর্পণকে প্রভাবিত করে বলে তিনি জানান।

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অত্যন্ত উষ্ণ সম্পর্ক ছিল। একটি ব্যাংক ও অপর একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে। ২০২২ সালে কলকাতায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। তখনই তাকে ফেরত চায় বাংলাদেশ। এমনকি ওই মধুর সময়েও পি কে হালদারকে ফেরত দেয়নি ভারত।’

প্রত্যর্পণ চুক্তি

দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। গত অক্টোবরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে সাবেক আরেকজন কূটনীতিক জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্দিবিনিময় চুক্তি, মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স এবং এক্সট্রাডিশন ট্রিটি (প্রত্যর্পণ চুক্তি) রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘তিন ধরনের দলিলের মধ্যে এখানে প্রত্যর্পণ চুক্তি কার্যকর হবে। তবে মূল বিষয় হচ্ছে, ভারত এ ক্ষেত্রে কী মনোভাব পোষণ করে।’

এক দেশের নাগরিককে অন্য দেশ থেকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন উষ্ণ রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং যাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে, তার বিষয়ে ওই সরকারের অবস্থান। মোটা দাগে দেশের অবস্থান, সম্পর্ক এবং প্রত্যর্পণকারী ব্যক্তির গুরুত্বের ওপর প্রত্যর্পণ নির্ভর করে বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্ক

আওয়ামী লীগ আমলে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে যায় ৫ আগস্টের পর। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে গিয়ে আশ্রয় নেন ভারতে।

এ বিষয়ে সাবেক আরেকজন কূটনীতিক বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের নেতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে। তবে সময়ের সঙ্গে প্রয়োজনও পরিবর্তন হয় এবং সেই সঙ্গে সম্পর্কও। ফলে এ অবস্থা সবসময় থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ সম্পূর্ণভাবে ভারতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এ ক্ষেত্রে সম্পর্কের পরিবর্তন হলেও প্রত্যর্পণ হবে কিনা, সেটি ভবিষ্যৎ বলতে পারবে।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort