হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া আজ। মহালয়ার দিন থেকে শুরু হয় দেবীপক্ষের।
শুভ মহালয়ার দিনের শুরুতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রী শ্রী চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার মর্ত্যলোকে আগমনের আমন্ত্রণ জানাবেন। মহালয়া স্থাপন করা হবে ঘট। করা বিশেষ পূজা। শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া।
সনাতন শাস্ত্র অনুযায়ী, পিতৃপক্ষের অবসান বা দেবীপক্ষের পূর্ববর্তী অবস্থাকে বলা হয় মহালয়া।
সনাতন শাস্ত্র মতে, ব্রহ্মার বর অনুযায়ী কোনো মহিষাসুরকে একমাত্র নারী শক্তির দ্বারা সম্ভব ছিল বধ করা। কোনো মানুষ বা দেবতা দ্বারা তাকে বধ করা সম্ভব ছিল না। তাই ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব শক্তি দ্বারা সৃষ্ট নারীশক্তি সিংহবাহিনী মা দুর্গা মহিষাসুরকে পরাজিত করে হত্যা করেন।
শাস্ত্র অনুযায়ী, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। আর এভাবেই মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গার আগমন ঘটে মর্ত্যলোকে।
শাস্ত্র মতে আরও জানা যায়, মহালয়ার দিন থেকে দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীক্ষা দেবী দুর্গা মায়ের পূজার। আর এই দিনেই দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হয়।
সনাতন পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় এবার দেবী দুর্গা মর্ত্যলোকে আসবেন ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে। এর ফল হচ্ছে ছত্রভঙ্গ। আর দেবী সপরিবারে স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন দোলায় (পালকি) চড়ে। যার ফল হচ্ছে মড়ক।
সনাতন পঞ্জিকা মতে আরও জানা যায়, আগামী ১১ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুভারম্ভ হবে। যথাক্রমে ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর অষ্টমী, ১৪ অক্টোবর নবমী ও ১৫ অক্টোবর দশমীর দিনে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জ্জনের মধ্য দিয়ে এবারের শারদীয় উৎসব সম্পূর্ণ হবে।
দেশের বিভিন্ন মন্দির ও পূজা কমিটির সূত্রে জানা যায়, শুভ মহালয়া উপলক্ষে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন মন্দির ও পূজা কমিটি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপে, ঢাকায় রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, রমনা কালীমন্দির, শ্রী শ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, স্বামীবাগের লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির, রামসীতা মন্দির, জয়কালী মন্দির, হবিগঞ্জের বাহুবলের জয়পুর শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর মামার বাড়ি শ্রী শ্রী শচী অঙ্গন ধামসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ভোর থেকেই শুরু হবে চণ্ডিপাঠ, চণ্ডিপূজা ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা।
এছাড়া ভোর সাড়ে পার্চটায় বনানী পূজা মন্ডপ মাঠে মহালয়ার কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তবে এসব অনুষ্ঠান সরকার ঘোষিত করোনার সব ধরণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠিত হবে।