কোভিডের সময় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের স্টাফরা ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। ৩৬ জন কাউন্সিলর জনগণের পাশে সর্বক্ষণ ছিল। অনেকেই সমালোচনা করেছেন। সমালোককারীরা সমালোচনা তো করবেই। যেহেতু আইভি সিটি করপোরেশনের মেয়র, অনেকেরই আতঙ্কের ব্যাপার।
কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য না। সাধারণ মানুষের জন্য আমি আপনাদেরই একজন আইভী। কিন্তু সেই আতঙ্কিত মানুষেরা মাঝে মধ্যে এমন আজগুবি কথা বলে, স্বাস্থ্য সেবায় আইভী কিছুই করে নাই, করোনার সময় কোথায় ছিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। করোনার সময় তো আমরাই ছিলাম, আপনারা তো ঘর বন্দি হয়ে বাড়িতে ছিলেন অনেকে।
নারায়ণগঞ্জে অন্তত যারা আছেন। যাদের বাড়িঘর, চৌদ্দ পুরুষের ভিটা নারায়ণগঞ্জে, তাদের কাছে অনুরোধ দয়া করে কিছু করার চিন্তা করেন। শুধু পলিটিক্স দিয়ে জান্নাত পাওয়া যাবে না। মানুষকে ভালোবেসে, মানুষকে সেবা করে জান্নাত পাওয়া যায়।
এছাড়া কিছুতেই না। আপনি নেতা হতে পারবেন, জান্নাতবাসী হবেন না। জান্নাত বাসী হতে হলে নবীর প্রেম থাকতে হবে, মানুষ প্রেম থাকতে হবে। মানুষের কল্যাণে মানুষের প্রেমে যে কাজ করবে, সে জান্নাতবাসী হবে।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে দেওভোগ নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ প্রবাসীদের অনুদানে পরিচালিত সেবামূলক প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ওয়াহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী আবুল আমিন, প্যানেল মেয়র আফসানা আফরোজ বিভা, সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক সচিব হোসনে আরা বেগম, মহাসচিব সাজ্জাদ রাশেদ প্রমুখ।
মেয়র আইভী আরো বলেন, কিডনি জনিত জটিল রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের ডায়ালাইসিসে অনেক টাকা খরচ হয়। নগরবাসীর কল্যাণের কথা চিন্তা করে সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের (এসবিএফ) সাথে যৌথ উদ্যোগে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার চালু করেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। এতে স্বল্পমূল্যে সেবা পাবে সাধারণ মানুষ।
নগরবাসীকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে এই কিডনি ডায়ালাইসিসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আটটি শয্যা নিয়ে এই কার্যক্রম চালু হলেও দশটি শয্যা স্থাপনের চুক্তি রয়েছে।
আমাদের এরূপ ৪টি হাসপাতাল আছে। চারটি হাসপাতালের মধ্যে তিনটি আউটডোর। বন্দরে এরকমই ছয়তলা বিল্ডিং আছে। যেখানে মায়েরদের নরমাল ডেলিভারি ও সিজারিয়ান হচ্ছে। অন্যান্য সেবাগুলো দেওয়া হয়। নবজাতক শিশুর জন্য নারায়ণগঞ্জে খুব ভালো চিকিৎসা নেই।
মাতুয়াইলের চিকিৎসকরা পাশের ক্লিনিকে রোগীদের পাঠায় দেয়। কিন্তু ওই ক্লিনিকে যাওয়ার সামর্থ্য সকলের নেই। ডাক্তারা অনেক কিছু করেন। কিন্তু ডাক্তারদের কাছে মানুষ অনেক বেশি আশা করেন। ডাক্তারদের আরো বেশি মানবিক হওয়া প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, প্রথম দিন নারায়ণগঞ্জে যখন লাশ পরে ছিল, একজন মানুষ আপনারা বের হয়নি। তখন কে এসেছিল? করোনায় গিটারবাদক হিরুর লাশ যখন ৬-৭ ঘন্টা পরেছিল, তার লাশ দাফনের সকল কাজ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন করেছে।
করোনা ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপক আতঙ্ক ছিল মানুষের মাঝে। করোনার আতঙ্ক কাটিয়ে উঠার জন্য দিনরাত কাজ করেছে সিটি করপোরেশন। এসময় জনগণের খাদ্য, ঔষধ যখন যেটা প্রয়োজন হয়েছে, সেটা পাঠানো হয়েছে। সকল কাউন্সিলর আমার পাশে কাজ করেছে। এসব কাজ করতে গিয়ে আমার বহুত কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছে। শহর অঞ্চলের কাউন্সিলরা মিডিয়া ফোকাস বেশি পেয়েছে।
ওইদিকের লোকজন কম পেয়েছে। সকলেই সমানভাবে কাজ করেছে। ইসলামিক সংগঠন থেকে শুরু করে অনেক সংগঠন দাফন করেছে। দলমত নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষের জন্য সিটি করপোরেশন কাজ করেছে।
তিনি আরো বলেন, পার্ক, খেলার মাঠ ও পুকুর করছি সারা নারায়ণগঞ্জবাসীর ডায়ালাইসিস সেন্টার মানুষের কল্যাণে করা হয়েছে। ২৭ টি ওয়ার্ডে পার্ক, খেলারমাঠ করছি। পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতকে প্রধান্য দিয়ে ও কাজ করছি। কিন্তু বিষয়গুলো ফোকাসে কম এনেছি।
প্রশাসনও মানুষের কল্যাণে কাজ করে, লিডারও (নেতা) মানুষের কল্যাণে কাজ করে। প্রশাসন ও লিডারের মাঝে ডিভিশন আনা যাবে না। মানুষের কাতারে গিয়ে দাড়াতে হবে।