‘মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গঠনে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একযোগে কাজ করতে হবে। মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করে গণসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মাদকাসক্ত নিরাময় করতে হবে। সমাজ থেকে কুসংস্কার, অন্যায়-অত্যাচার দূরীকরণে যেমন শিক্ষার বিকল্প নেই, তেমনি মাদকমুক্ত সমাজ গঠনেও খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করার সুযোগ করে দিতে হবে।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) শরীয়তপুরের নড়িয়ার বিঝারী উপসী তারা প্রসন্ন উচ্চ বিদ্যালয় আয়োজিত, শেখ রাসেল স্মৃতি ফুটবল টূর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে, প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে একজন প্রচণ্ড ক্রীড়ানুরাগী। দেশের যেখানেই গুরুত্বপূর্ণ খেলা হয়েছে, সেখানেই তিনি ছুটে গেছেন। মূলত ক্রীড়া পরিবারের সন্তান বলেই খেলাধুলার প্রতি তার দুর্বলতা বেশি। বিশ্বের বুকে আমাদের গৌরবের একটি বড় স্থান করে দিয়েছে দেশের ক্রীড়াবিদরা। ক্রীড়াঙ্গণে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। আমাদের লক্ষ্য ক্রীড়াক্ষেত্রে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, অসামান্য গৌরব বয়ে আনবে।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তরুণ বয়সে ফুটবল পায়ে মাঠ মাতিয়েছেন ঢাকাই লিগে। দীর্ঘদিন খেলেছেন ঢাকা ওয়ান্ডারার্স স্পোর্টিং ক্লাবে। বঙ্গবন্ধুর দুই ছেলে শেখ কামাল ও শেখ জামালও ছিলেন সফল ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক। বর্তমান ঢাকা আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন শেখ কামাল। শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল খুকুও ছিলেন দেশের খ্যাতনামা অ্যাথলেট। এমন ক্রীড়াপ্রেমী পরিবারে জন্ম নেওয়া বঙ্গবন্ধু কন্যার ক্রীড়াপ্রেম থাকবে সেটাই স্বাভাবিক ঘটনা। বাবা ও ভাইদের দেখানো পথেই বাংলাদেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে একের পর এক অবদান রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। এখনো সেই ধারা বজায় রেখেই দেশের ক্রীড়া এগিয়ে নিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
উপমন্ত্রী শামীম বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনে এই দেশকে গড়ে তুলবে। শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষকদের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের পাঠদানে মনোযোগী করে গড়ে তোলা। খারাপ সঙ্গ ত্যাগ করে শিক্ষার্থীরা যেন ভবিষ্যতে দায়িত্বশীল মানুষ হয়ে উঠতে পারে, সে বিষয়ে শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে হবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের খেলাধুলায়ও পারদর্শী করে তুলতে হবে। এটা করা শিক্ষকদের দায়িত্ব। সমাজ থেকে মাদক দূরীকরণে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
বিঝারী উপসী তারা প্রসন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ নুরুল আমীন রতনের সভাপতিত্বে ও টূর্নামেন্ট কমিটির সদস্য সচিব আখতারুজ্জামান জীবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শরিয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, শরীয়তপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য জহির সিকদার, নড়িয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ রাশেদ উজ্জামান, পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. খবিরুজ্জামান বাচ্চু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক মাল, সাধারন সম্পাদক হাসানুজ্জামান খোকন, সহ-সভাপতি বাদশা শেখ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ী প্রমূখ।
এসময় মাঠের চারপাশে প্রায় ২০ হাজার জনগণ উপস্থিত ছিলেন।