শরীয়তপুরে শিশু মো. শাকিল মাদবর (১৫) নামের এক শিক্ষার্থীকে হত্যা মামলায় দুজনকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া এই মামলায় আরও ৪ আসামিকে খালাস প্রদান করেন আদালত।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক আব্দুস সালাম খান এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন শাকিব ওরফে বাবু ও ইমরান মোড়ল। খালাসপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন সজিব মাঝি (২২), আক্তার মাদবর (২৬), মহসিন হাওলাদার (২৫), স্বপন সরদারের (৪৫)। অন্য একজনের রায় উচ্চ আদালতে স্থগিত আছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ।
মো. শাকিল মাদবর জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা হাজী কালাই মোড়ল কান্দির এলাকার সালাম মাদবরের বড় ছেলে। সে অ্যাম্বিশন কিন্ডার গার্টেন অ্যান্ড হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিলন রহমান মুরাদ বলেন, আসামি ইমরান মোড়লের যে রায় হয়েছে, তা সম্পূর্ণ তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। যখন এই মামলায় ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়েছিল, তাতে সে কোথাও বলেনি যে সে হত্যার সঙ্গে ছিল। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৫ জুন বিকেলে জাজিরা উপজেলার হাজী কালাই মোড়লের কান্দি গ্রামের শাকিল মাদবরকে খেলার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান আসামি শাকিব মাদবর বাবু (২০)। পরে তিনি আক্তার মাদবর (২৬), সজিব মাঝি (২২), ইমরান মোড়ল (২০), মহসিন হাওলাদার (২৫) ও স্বপন সরদারের (৪৫) সহযোগিতায় শাকিলকে উপজেলার মোসলেম ঢালীর কান্দি গ্রামের বারেক মৃধার বাড়ির পাশে আটকে রাখে। একপর্যায়ে শাকিলের চাচা শাহাজুল ইসলাম মাদবরের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। পরে মুক্তিপণ না পেয়ে শাকিলকে হত্যা করে মরদেহ মাটিচাপা দিয়ে রাখে।
এ ঘটনায় প্রথমে শাকিলের বাবা থানায় অভিযোগ করেন। পরে ওই বছরের ২৬ জুন অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ বাবু ও ইমরানকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে বাবুর তথ্যমতে ২৭ জুন শাকিলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তর জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। তারপর জাজিরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন ওই ছাত্রের বাবা সালাম মাদবর।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ বলেন, শিশু শাকিল মাদবরের অপহরণ ও হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। তিনি আরও বলেন, আমরা এই মামলায় আংশিকভাবে সন্তুষ্ট হয়েছি। এই মামলায় যারা খালাস পেয়েছে, আমি বাদীপক্ষের সঙ্গে কথা বলে উচ্চ আদালতে আপিল করব। এই মামলায় সব আসামির সম্পৃক্ততা রয়েছে।