শরৎকে বলা হয় ঋতুর রানী। এ সময় আকাশে তুলার মতো ভেসে বেড়ায় সাদা মেঘের ভেলা। প্রকৃতি বেশ নির্মল ও স্নিগ্ধতা নিয়ে চুপটি করে বসে থাকে। নদীর তীর তো বটেই, পড়ে থাকা জমিনও ঢেকে যায় শে^তশুভ্র কাশফুলে। ছোটবড় সবাই ছুটে যায় কাশবনের সৌন্দর্য দেখার জন্য। ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায় এ সময়। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে শরতের এ সময় ফেসবুকে উঁকি মারলেই দেখা যায় কাশবনের ছবি আপলোড করছেন কেউ কেউ। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঢাকার আশপাশের কিছু স্থান, যেখানে আপনি উপভোগ করতে পারেন শরৎ।
দিয়াবাড়ী : রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী কাশবনের জন্যই জনপ্রিয়। এ সময় দিয়াবাড়ীজুড়েই দেখা মিলবে কাশফুলের। অপরূপ এই জায়গাটিকে ‘ঢাকার কাশফুলের রাজ্য’ বললেও ভুল হবে না। ছুটির দিন অথবা যেকোনো উৎসবের ছুটিতে পর্যটনপ্রিয় মানুষেরা এখন ছুটে যান দিয়াবাড়ীতে। তরুণ-তরুণীদের ভালোই সমাগম হয় এখানটায়। ঘটা করে তোলা হয় ছবি। জায়গাটির চারদিকে বিরাজ করে নীরবতা। একটু পর পর সেই নীরবতা ভাঙে ঢাকা এয়ারপোর্টের উড়োজাহাজের শব্দে। কিছুক্ষণ পর পর সেখানে আপনার মাথার ওপর দিয়ে সাঁই সাঁই করে উড়ে যাবে উড়োজাহাজ। অন্য রকম এক ভালোলাগা তৈরি করে এই সুন্দর দৃশ্যগুলো।
মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ : বুড়িগঙ্গার তীরঘেঁষে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধেও বসে শরতের আড্ডা। প্রতিদিন কাশফুলের নির্মল হাওয়া উপভোগের জন্য সেখানে ভিড় করে সব বয়সি মানুষ। দিনশেষে পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে আসেন হাজারো মানুষ।
কাশফুলের পাশাপাশি এখানে নদীতে রয়েছে নৌকা। যে-কেউ মন চাইলে কম খরচে নৌকায় চড়ে ঘুরতে পারেন। অনেকেই আবার নদীতে নেমে জলকেলিতে মেতে ওঠেন। তবে শুক্র ও শনিবার ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশি।
সারিঘাট : শরতের স্নিগ্ধ পরশ পেতে ঘুরে আসতে পারেন কেরানীগঞ্জের সারিঘাট।প্রাকৃতিক ছোঁয়ার জন্য স্থানটি মন্দ নয়। শরতের দিগন্তজোড়া কাশফুল আপনার চোখকে করবে শীতল।
এ ছাড়া এখানের সবুজ, শান্ত-নিরিবিলি পরিবেশ যে কারও ভালো লাগবে। কেউ চাইলে কায়াকিং এবং নৌকা ভ্রমণও করতে পারেন। চাইলে গোসলও করতে পারেন, পানি খুবই পরিষ্কার।
মায়াদ্বীপ : এই শরতে খুব সহজে ঘুরে আসতে পারেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক গ্রামের মায়াদ্বীপ থেকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে নুনেরটেক নামেও পরিচিত। মেঘনার বুকে কাশফুলের মায়া ছড়িয়ে থাকে শরৎজুড়ে। এই দ্বীপে কাশফুল ছাড়াও আছে প্রকৃতির সান্নিধ্যে হেঁটে বেড়ানোর অবকাশ।
পরিচিত হতে পারবেন স্থানীয়দের জীবনযাত্রার সঙ্গে। রাজধানীর গুলিস্তান থেকে বাসে চড়ে বৈদ্যের বাজার হয়ে মেঘনার ঘাট থেকে ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া করে মায়াদ্বীপ যাওয়া যায়।