
নিজস্ব সংবাদদাতা: রূপগঞ্জ থানাধীন মধুখালী পূর্বপাড়ার মোঃ আক্তার হোসেন’র পুত্র কাঞ্চন ছলিমউদ্দিন কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান রেদুয়ান (১৮) কে গত ২৪ অক্টোবর রাত অনুমান ১১টা মধুখালী এলাকার হোসেন আলী’র পুত্র রিফাত (২৫) ও মুঞ্জুর (২০), আব্দুল হক’র পুত্র বাদল (৪০), আকবর আলী’র পুত্র হোসেন আলী (৫০) এরা সংঘবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান রেদুয়ানকে জোড়পূর্বক মুখ বেঁধে পার্শ্ববর্তী এলাকার দেলোয়ার হোসেন দেলু’র পরিত্যক্ত ঘরে আটক রেখে, খুন করার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি মেরে রক্তাক্ত জখম করার পর ধারালো ছুরি দ্বারা ডান চোখ উপড়ে ফেলে।
২৫ অক্টোবর রাতে বাবা মোঃ আক্তার হোসেন লোক মারফত এ খবর পেয়ে ছেলেকে ও-ই পরিত্যক্ত বাড়ি হতে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে এবং রূপগঞ্জ থানায় ২৫/১০/২০২৫ইং তারিখে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যাহার মামলা নং- ৮৫।
কিন্তু দুঃখের বিষয় এ-ই যে, ও-ই মামলায় ৩ জন আসামী আদালত হতে জামিনে বের হয়ে মামলার প্রধান আসামী রিফাত পলাতক থাকিয়া এখন আবারো একত্রিত হয়ে, আক্তারকে মামলা তুলিয়া নিতে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি প্রদর্শণ করে আসছে বলে অভিযোগ উঠে এসেছে।
ঘটনার বিবরণে মোঃ আক্তার হোসেন বলেন- আমার বাড়ীর সম্পত্তি লইয়া দীর্ঘদিন যাবৎ রিফাত, বাদল, হোসেন আলী ও মুঞ্জুর’র সাথে বিরোধ শত্রুতা চলিয়া আসিতেছে। বিরোধের জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে এ যাবৎ একাধিক মামলা মোকদ্দমা চলমান আছে। আমার ছেলে রাকিবুল হাসান রেদুয়ান (১৮), রূপগঞ্জ থানাধীন কাঞ্চন ছলিমউদ্দিন কলেজে একাদশ শ্রেনীতে পড়ালেখা করিয়া আসিতেছে। গত ২৪/১০/২০২৫ইং তারিখ রাত অনুমান ১১টায় আমার ছেলে বাড়ীর সামনে রাস্তায় গেলে পূর্ব শত্রুতার জেরে উল্লেখিত আসামীরা রেদুয়ানকে জোড়পূর্বক মুখ বেঁধে পার্শ্ববর্তী একই গ্রামের পশ্চিমপাড়া জনৈক দেলোয়ার হোসেন দেলু’র পরিত্যক্ত ঘরে আটকে রেখে, সকল আসামীরা খুন করার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ী মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। আমি জানতে পারি, রিফাত ধারালো ছুরি দ্বারা খুন করার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের ডান চোখ উঠিয়ে ফেলেছে। প্রতিবেশী সুজন ঘটনার বিষয়ে আমাকে জানালে, আমি তাৎক্ষনিক ঘর থেকে বাহির হয়ে আমার আত্মীয় স্বজনদের এবং পাড়া প্রতিবেশী সুজন, ছায়মুন ও মোহাম্মদ আলী সহ ও-ই রাতে অনুমান ২টায় একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দেলু’র পরিত্যক্ত ঘরে উপস্থিত হই। রক্তাক্ত অবস্থায় আমার ছেলেকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আমি আমার ছেলেকে আত্মীয় স্বজনদের সহায়তায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া যাই। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার ছেলেকে জাতীয় চক্ষু ইনিষ্টিটিউট আগারগাঁও শেরে বাংলা নগর রেফার্ড করেন। আমার ছেলেকে ঢাকা আগারগাঁও জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে নিয়া চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি। আমার ছেলে বর্তমানে উক্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থায় আশংকা জনক।
আমি ছেলের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে থাকা অবস্থায় ৩ জন আসামী জামিনে বের হয়ে পলাতক আসামী রিফাত’র সাথে যোগাযোগ করে বর্তমানে আমাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ আমার ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলার যড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
অপরাধীদের আঘাতে আমার ছেলে এখন মুমূর্ষু অবস্থায়। তাঁর চোখের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যাহা প্রচুর অর্থ প্রয়োজন। আমি এখন ছেলের এ-ই অবস্থায় দিশেহারা ও মর্মাহত। এর মধ্যে আসামীদের হুমকি ধামকিতে আমি ও আমার ছেলে প্রাণের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
আমি এ সকল অপরাধীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি। সে-ই সাথে মহামান্য আদালতের নিকট ন্যায় বিচারে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই।