রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী তীরভর্তি ২০০ ফুট এলাকা দখল করে বালু ফেলে ভরাটের অভিযোগে মেসার্স গাউছুল আজম এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. সোহাগের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছে বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ।
রোববার (২৯ আগষ্ট) রাতে বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপ-পরিচালক (বন্দর) মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়েরের আবেদন করেন। অভিযোগে বিবাদীর বিরুদ্ধে নদী ও নদীর তীরভূমি তথা নি¤œাঞ্চল ভরাট বা ক্ষতিগ্রস্ত করায় পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ১৫(১) এর টেবিল ৮ ও পেনাল কোডের ৪৩১ নং ধারা অনুযায়ী কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অভিযোগে বিবাদী উল্লেখ করেন, গত ২৫ আগষ্ট স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ জানতে পারে রূপগঞ্জ উপজেলার ব্রাক্ষনগাও মৌজায় শীতলক্ষ্যা নদীর ২০০ ফুট দখল করে সেখানে বালু দিয়ে ভরাট করছে মেসার্স গাউছুল আজম এন্টারপ্রাইজ। পরে বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের কর্মকর্তারা সরেজমিনে সেখানে পরিদর্শন করেন।
জানা গেছে, মহামান্য হাইকোর্টের রীট পিটিশন নং ৩৫০৩/২০০৯ এর নির্দেশনা অনুযায়ী, নদী বলতে সিএস ম্যাপে উল্লেখিত যে স্থান নদী প্রদর্শণ করা হয়েছে, সেটা নদী হিসেবেই ধরা হবে। নদীর জমির শ্রেণির পরিবর্তন বা পরিবর্ধন যোগ্য নয়। কোনভাবেই বন্দোবস্ত, শ্রেণির পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা যাবে না। নদীর জমি কোনভাবেই বালু কিংবা অন্য কিছু দিয়ে ভরাট করা যাবেনা। ওই আদেশে নদীকে দখলমুক্ত করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ প্রদান করা হয়। একইভাবে হাইকোর্টের রীট পিটিশন নং ১৫৩৩৩/১২ এর আদেশেও অনুরূপ নদী ভরাট সম্পূর্ণ নিষেধ করে ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ১৫(১) এর টেবিল ৮ ও পেনাল কোডের ৪৩১ নং ধারা সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রæয়ারি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ নদীকে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণা করে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত বলেছেন, মানুষের জীবন-জীবিকা নদীর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানবজাতি টিকে থাকার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে নদী। নাব্যতা সংকট ও বেদখলের হাত থেকে নদী রক্ষা করা না গেলে বাংলাদেশ তথা মানবজাতি সংকটে পড়তে বাধ্য।
বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক শেখ মাসুদ কামাল জানান, নদী দখল ও ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে আমরা মামলা দায়েরের জন্য আবেদন করেছি। ওই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সও বাতিল করা হবে। অচিরেই নদীর ওই জমি দখলমুক্তে আমরা অভিযান পরিচালনা করবো। এছাড়াও নদী দখলমুক্তে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযান পরিচালনা করে আসছি। দখলদাররা যতই প্রভাবশালী হোকনা কেন তাদের কোন ছাড় নেই।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল ফয়সাল মোহাম্মদ সায়েদ জানান, বিআইডবিøউটিএ’র পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা অভিযোগটি তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিব।