নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় যৌতুকের জন্য স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী আলমগীর হোসেনের (২৮) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-২ এর বিচারক মো. মাহাবুবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দণ্ডাদেশ পাওয়া আলমগীরের পরিবারের ছয় সদস্য- বাবা সিরাজুল ইসলাম, মা আনোয়ারা বেগম, বোন শিল্পী বেগম, চাচা ওবায়দুর রহমান, বড় ভাই জিয়াউর রহমান ও চাচি রোকসানা বেগমকে মুক্তি দিয়েছেন আদালাত।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইজিবাইক চালক আলমগীর হোসেন উপজেলার চাঁপানী ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলী গ্রামের খতিবর রহমানের মেয়ে সুমী আক্তারকে বিয়ে করেন। সেসময় সুমীর বাবা আলমগীরকে ইজিবাইক কিনতে নগদ এক লাখ টাকা দেন। দুই বছর পর আলমগীর ইজিবাইকের ব্যাটারি কিনতে আরও ৫০ হাজার টাকা যৌতুক চান। এজন্য সুমীকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বার বার চাপ প্রয়োগ করেও ব্যর্থ হন তিনি। ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর রাতে স্ত্রী সুমীকে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে বেধরক মারধর করেন। ফলে ঘটনাস্থলেই মারা যান সুমী।
ঘটনার পর দিন ৭ নভেম্বর সুমীর বাবা বাদী হয়ে ডিমলা থানায় আলমগীরসহ তার পরিবারের সাতজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মারপিটের আঘাতেই সুমীর মৃত্যু হয় বলে ময়না তদন্তের ভিত্তিতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এরপর দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই রায় দিলেন আদালত।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-২ এর সরকারি কৌশলি অ্যাডভোকেট রমেন্দ্র বর্ধন বাপ্পী। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৫ বছর এই রায় তিনি খুশি। অন্যদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবী আল-বরকত হোসেন রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।