বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারের দেশ মালয়েশিয়ায় কাল শুক্রবার (৩১ মে) শেষ হয়ে যাচ্ছে শ্রমিক নেওয়ার সুযোগ। এ কারণে দেশটির বিদেশি শ্রমিক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাড়াহুড়া করে শ্রমিক আনছেন।
গত কয়েকদিনে দেশটিতে এত শ্রমিক প্রবেশ করেছেন যে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে যাত্রীদের জটলা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া শ্রমিকরা এখন বিমানবন্দরেই আটকা পড়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, নিয়োগকারীরা শ্রমিকদের বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যাচ্ছে না। এ কারণে অনেক শ্রমিক বিমান থেকে নামার পর সেখানেই আটকা পড়ে গেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কুয়ালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-১ এ শুয়ে-বসে আছেন শ্রমিকরা।
এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিন্ডিকেট। তারা সাধারণ যাত্রীদের কাছ বিমান ভাড়া হিসেবে সাধারণের চেয়ে কয়েক গুণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
বিমানবন্দরে শ্রমিকদের দুর্ভোগে পড়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এ নিয়ে মুখ খুলেছেন মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের পরিচালক জেনারেল দাতুন রুসলিন জসুহ।
তিনি বলেছেন, ৩১ মে-র পর দেশটিতে কেউ আর বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ দিতে পারবে না। ফলে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো শেষ মুহূর্তে হাজার হাজার শ্রমিককে নিয়োগ দিয়েছে। আর সেসব শ্রমিকই এখন মালয়েশিয়াতে আসা শুরু করেছেন। এ কারণে হঠাৎ করে বিদেশি শ্রমিকের প্রবেশের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।
এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) এক বিবৃতিতে জেনারেল দাতুন রুসলিন বলেছেন, “নিয়োগকারীদের বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার ৩১ মে পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছে। এ কারণে এমন ঘটনা ঘটছে।”
তিনি আরও বলেছেন, “যেসব বিদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করছেন তাদের সবাইকে পর্যালোচনার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে এবং বিমাবন্দরে তাদের স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে।”
এই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, “সাধারণত মালয়েশিয়ায় প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১ হাজার বিদেশি শ্রমিক আসেন। কিন্তু গত ২২ মে এই সংখ্যা ২ হাজার ৫০০ জনে পৌঁছায়। আর ২৭ মে এই সংখ্যা ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজারে পৌঁছায়।”
কাল ৩১ মে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করছেন তিনি। কারণ বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো মালয়েশিয়ায়া ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে।
শ্রমিকরা যেন মালয়েশিয়ায় এসে কোনো ধরনের ভোগান্তিতে না পড়েন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেনারেল দাতুন রুসলিন। এর অংশ হিসেবে বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয়র ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া নিয়োগকারীদের কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।