‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের স্বার্থ সমুন্নত রেখেই কাজ করেন। তাঁর ভারত সফরের সব চুক্তিই দেশের জনগণ ও জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রেখেই করা হয়েছে। দেশের স্বার্থ বিরোধী কোন চুক্তি তিনি করবেন না। গঙ্গা চুক্তি ও কুশিয়ারা চুক্তি তিনিই করেছেন। আর তিস্তা চুক্তিও জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ করতে পারবেন না।’
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) শরীয়তপুরের জাজিরার পালেরচর ইউনিয়নে বন্যা ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা, ঢেউটিন ও চেক বিতরণকালে, প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এসব কথা বলেন।
বিএনপির উদ্দেশ্য শামীম বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে যা বলেছে তা বিএনপি ও বেগম খালেদা জিয়ার বেলায় প্রযোজ্য। কারণ, আপনাদের মনে আছে, খালেদা জিয়া ভারত সফর থেকে আসার পর তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে কি কথা হয়েছে। তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ওহ আমি তো ওটা ভুলেই গিয়েছিলাম যাদের নেত্রী ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যার কথা বলতে ভুলে যায়, তারাই সবসময় ভারতকে সব দিয়েছে, কিছু আদায় করতে পারেনি।
উপমন্ত্রী শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে হওয়া ৭টি সমঝোতা চুক্তির মধ্যে অন্যতম কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি। চুক্তি অনুযায়ী, কুশিয়ারা নদী থেকে রহিমপুর খাল দিয়ে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলায় শুকনো মৌসুমে চাষাবাদে আসবে ব্যাপক পরিবর্তন। একইসঙ্গে উপকৃত হবেন কানাইঘাট ও বিয়ানীবাজার উপজেলার লক্ষাধিক কৃষক। এছাড়াও এ খালের ভাটিতে থাকা হাওরাঞ্চলেও বোরো চাষাবাদ সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর পরে জননেত্রী শেখ হাসিনার মতো দেশপ্রেমিক আর কেউ নেই। আর এদেশের মানুষ একমাত্র তাকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখে। কারণ, তিনিই বাস্তবায়ন করেন। তিনি কখনো দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনগণের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে কোনো কাজ করেন না।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জাজিরা উপজেলা চেয়ারম্যান মোবারক আলী সিকদার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য জহির সিকদার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফরিদপুর অঞ্চলের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল আলম, শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবীব, জাজিরা পৌরসভার মেয়র ইদ্রিস মাদবর, পালেরচর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় উপ-মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক কেএম ফারুক হোসেন মুন্না প্রমূখ। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে বন্যা ও নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন উপমন্ত্রী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে জরুরি প্রকল্প চলমান থাকলেও, নদীভাঙন রোধে যা যা করণীয় তা করার নির্দেশ দেন তিনি।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে বন্যা ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ৮০টি পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল ও ২ হাজার করে টাকা দেন এবং ২৫টি পরিবারকে ২ বান্ডিল করে টিন ও ৬ হাজার করে টাকা দেন উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।