হবিগঞ্জের মাধবপুরে মাদক চোরাচালান রোধে বাড়ির সামনে বিজিবির লাগানো সাইনবোর্ডে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বিজিবির দাবি- চোরাচালানি ও মাদক কারবারি বেড়ে যাওয়ায় তাদের প্রতিরোধে এ ব্যবস্থা গ্রহণ নেওয়া হয়েছে।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বিজিবির হবিগঞ্জ ৫৫ ব্যাটালিয়নের মনতলা, হরিণখোলা ও রাজেন্দ্রপুর বিওপির সদস্যরা বিভিন্ন গ্রামের ১০টি বাড়িতে ‘মাদক ব্যবসায়ীর বাড়ি’ ও ‘চোরাকারবারির বাড়ি’ লেখা সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন। গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) থেকে এসব সাইনবোর্ড বাড়ির সামনের গাছে লাগানো হয়। পরে কে বা কারা এর ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। এ নিয়ে জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অনেকেই এর পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য করেছেন।
চিহ্নিত করা ১০টি বাড়ির মালিকরা হলেন- মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের বলু মিয়া, রাজেন্দ্রপুর গ্রামের আহাদ মিয়া, শ্রীধরপুর কবির মিয়া, চৌমুহনী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের ধনু মিয়া, রামনগর গ্রামের কাউছার মিয়া, রামনগর গ্রামের জয়নাল মিয়া, রামনগর গ্রামের সফু মিয়া, কমলপুর গ্রামের স্বপন মিয়া, খালেক মিয়া ও জানু মিয়া। এরা বিভিন্ন সময়ে মাদকসহ বিজিবির হাতে ধরা পড়েছেন।
মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়ি চিহ্নিত করার বিষয়ে হবিগঞ্জের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হাফিজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, কোনো নাগরিকের বাড়িতে এ ধরনের সাইনবোর্ড দেওয়া আইনগত বেআইনি। এটি সরাসরি নাগরিকের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করার সামিল। একজন লোক চোরাকারবারি হতে পারে, তার বাড়িতে শিশু, বৃদ্ধাসহ একাধিক নারী থাকতে পারে, তারাতো নির্দোষ। সবাইতো অপরাধী নয়। একজনের অপরাধের কারণে পুরো বাড়িতে লেভেল কিংবা সাইনবোর্ড লাগানো বেআইনি।
বিজিবির হবিগঞ্জ ৫৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সামীউন্নবী চৌধুরী বলেন, বিজিবির হাতে ধরা পড়া চিহ্নিত মাদক কারবারিদের বাড়িতেই এভাবে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। মূলত এটি মহৎ উদ্দেশ্যে লাগানো হয়েছে। চোরাকারবারি ও মাদক কারবারিদের সামাজিকভাবে চাপে রাখার জন্য এই কাজ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য মাদক কারবারি ধরা পড়ছে, তারপরও মাদক ব্যবসা থেমে নেই। অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভারতে মাদক নিয়ে চলে যায় তারা। আমাদের যুবসমাজ মাদকের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।