রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জ শহরে মাদকের আখড়া বলে পরিচিত চাঁদমারী বস্তি। জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অদূরে এই বস্তিতে গাঁজা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য বিক্রি হতো। এসব মজুদ থাকতো সরকারি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ঘরগুলোতে। ‘প্রশাসনের নাকে ডগায় অবৈধ মাদক ব্যবসা’ এমন শিরোনামে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থায় ছিল খোদ পুলিশ-প্রশাসন। অবশেষে অ্যাকশনে গিয়েছে জেলা পুলিশ। গত তিনদিন যাবৎ এই বস্তিতে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) এই বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম।
তিনি জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা চাঁদমারী বস্তি দখলমুক্ত করা হয়েছে। বস্তির ঘরগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। এই জায়গা পুনরায় যাতে দখল না হয় সেজন্য চারপাশে বেষ্টনী দিতে সওজ’কে বলা হয়েছে বলে জানান এসপি।
চাঁদমারী বস্তি উচ্ছেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি অনেক পুরাতন একটি বস্তি। এই এলাকায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় রয়েছে। এই বস্তিটি সম্পূর্ণভাবে সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা। এই বস্তিকে ঘিরে অনেক ধরনের কথা আমরা শুনেছি এবং এখানে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে। প্রতিবার এই বস্তি উচ্ছেদ করতে আসলে এইখানে কোনো না কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।’
এসপি বলেন, ‘আমি যোগদানের পর থেকে নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রাণের দাবি দেখেছি, এই বস্তি থেকে মাদক নির্মূল করা অথবা বস্তিটি অপসারণ করা। তাই এটি উচ্ছেদে আমরা জেলা পুলিশ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করি। যার ফলশ্রæতিতে গত ৩ দিন এখানে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। যাতে জেলা পুলিশের নেতৃত্বে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ কাজ করেছে। প্রায় শতাধিক পুলিশ কাজ করার পর আজকে বস্তিটি শতভাগ অপসারণ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক সময় বস্তি বা স্থাপনা অপসারণের পর সেটি আবার পুনর্দখল হয়ে যায়। এটি যাতে পুনরায় দখল না হয় সেজন্য এখানে বেষ্টনী নির্মাণের জন্য আমরা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সাথে কথা বলেছি এবং তারা আজকে থেকে বেষ্টনী নির্মাণের কাজ করবে বলে আমাদের জানিয়েছে। আশা করি সপ্তাহখানেকের মধ্যে তাদের একাজ শেষ হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন, ‘এখানে বেশ কয়েকটি ঘরে মাদক সেবন ও বিক্রি হতো। আমরা প্রথম দুই দিনে বেশ কয়েকজনকে আটক করেছি, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং তাদেরকে আমরা আদালতে সোপর্দ করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি উচ্ছেদ চলাকালীন সময়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে এবং সে অনুযায়ী আমরা আমাদের কাজ করেছি।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমীর খসরু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ শফিউল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান প্রমুখ।