শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
জাতীয় সমাজসেবা দিবস ওয়াকাথন ও মুক্ত আড্ডা মায়ের মৃত্যু বার্ষিকী স্বরণে সমস্ত কবরবাসীদের রুহের মাগফেরাত কামনায় ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল বেপরোয়া যুবলীগ নেতা কাজী জহির করছেন জমি দখলের চেষ্টা নাসিক ৮ নং ওয়ার্ডে তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণে সাদরিল মদিনার সনদ কে মডেল বানিয়ে নতুন বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় ঢেলে সাজাতে হবে: অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ নারায়ণগঞ্জে কৃষকদলের কমিটি বিলুপ্ত আটকে আছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়ক উন্নয়নের কাজ, ভোগান্তি ঝুলছিল গৃহবধূর লাশ, পরিবারের দাবি হত্যা নারায়ণগঞ্জে ১০ টাকায় মিলছে ফুলকপি! বন্দরে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মহানগর বিএনপির আলোচনা সভা ও শীতবস্ত্র বিতরণ

মনের ওপর প্রভাব ফেলে পেটের স্বাস্থ্য

  • আপডেট সময় বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৫, ৩.৪৪ এএম
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

মানবদেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা থেকে শুরু করে মানসিক রোগ সবকিছুর সঙ্গে অন্ত্র বা পেটের স্বাস্থ্যের সংযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে এক গবেষণায়। আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর পেটের স্বাস্থ্যের প্রভাব নিয়ে জ্ঞান যেমন বেড়েছে, তেমনি এই পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখার ব্যাপারে আগ্রহ বেড়েছে সমান তালে।

পোলারিস মার্কেট রিসার্চের তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী প্রোবায়োটিকের বাজার ২০২১ সালে প্রতি বছর প্রায় ৬ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে এবং ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর এই হার সাত শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখা কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনি কীভাবে আপনার পেটের স্বাস্থ্য ভালো করতে পারেন তা নিয়ে এক বিষদ প্রতিবেদন ছেপেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। সময়ের আলোর পাঠকদের জন্য এখানে তা তুলে ধরা হলো-

সুস্থ অন্ত্র কী?
মানবদেহের অন্ত্র অর্থাৎ পাকস্থলী থেকে পায়ু পর্যন্ত লম্বা প্যাঁচানো যে নালি থাকে সেটার গঠন বেশ জটিল। এই জটিল গঠনের কারণে, অন্ত্রের সুস্থতা শনাক্ত করা অন্যান্য অঙ্গের সুস্থতা শনাক্ত করার মতো সহজ নয়। অন্ত্রের স্বাস্থ্য পরিমাপ করার জন্য এমন কোনো একক উপায় নেই যা ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের অন্ত্র মাইক্রোবস বা জীবাণুতে পূর্ণ। এদের সংখ্যা এতটাই বেশি যে সব মাইক্রোবসকে যদি একত্রিত করা হয়, তবে তাদের ওজন এক কেজি ৮০০ গ্রামের বেশি হবে। অন্ত্রে পিত্ত, শ্লেষ্মা, বিভিন্ন ধরনের অণুজীব, হজম হওয়া খাবার, অপাচ্য বা শোষিত খাবার, বিপাকীয় খাবার এমন বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে। অন্ত্রের এসব উপাদানের প্রতি গ্রামে ১০ হাজার কোটি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. ক্যাটেরিনা জনসন অন্ত্র ও মস্তিষ্কের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, একটি সুস্থ অন্ত্রে অনেক বৈচিত্র্যময় মাইক্রোবস বা জীবাণু থাকে। মাইক্রোবায়োম বিজ্ঞান এখনও তুলনামূলকভাবে একটি অপরিণত গবেষণা ক্ষেত্র। অর্থাৎ আমরা এখনও বিশদভাবে জানি না যে একটি সুস্থ অন্ত্র দেখতে কেমন হয়। তিনি বলেছেন, আমাদের মাইক্রোবায়োমগুলো বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে এতই স্বতন্ত্র আর বৈচিত্র্যময়, তার মধ্যে মাইক্রোবায়োমগুলোর হাজার হাজার বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে (এবং প্রজাতির মধ্যে বিভিন্ন স্ট্রেন রয়েছে), যার মধ্যে অনেকগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে আমরা জানি না।

অন্ত্র সুস্থ থাকা কেন জরুরি?
ডা. জনসন বলেছেন, অন্ত্র ‘শরীরের প্রতিটি অঙ্গকে’ প্রভাবিত করতে পারে। মস্তিষ্ক ও অন্ত্রের মধ্যে একটি শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে যা গাট ব্রেইন এক্সিস অর্থাৎ বাংলায় অন্ত্র-মস্তিষ্কের অক্ষ নামে পরিচিত। এখানে অন্ত্র ও মস্তিষ্ক একে অন্যের জন্য অপরিহার্য-গবেষণায় দেখা গেছে যে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের অনুপস্থিতির কারণে মস্তিষ্কের বিকাশ অস্বাভাবিক হতে পারে। অন্ত্রকে কখনো কখনো দ্বিতীয় মস্তিষ্ক বলা হয় কারণ অন্ত্রে থাকে ব্যাকটেরিয়া মস্তিষ্কের ১০ কোটি নিউরনের মাধ্যমে আমাদের আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে। নিউরন হলো আমাদের মস্তিষ্ক এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে থাকা কোষ যা আমাদের শরীরকে বার্তা দেয় যে কখন কেমন আচরণ করতে হবে। আমাদের অন্ত্র, মস্তিষ্কে সেরোটোনিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটার তৈরি করতে পারে যা আমাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। নিউরোট্রান্সমিটার এক ধরনের বার্তাবাহক যা স্নায়ুসন্ধি দিয়ে এক নিউরন থেকে অপর নিউরনে রাসায়নিক সিগন্যাল পাঠায়। আমাদের অন্ত্রের সবচেয়ে বড় কাজ খাদ্য থেকে পুষ্টি শোষণ করা। মেগান রসি, যিনি যুক্তরাজ্যের দ্য গাট হেলথ ডক্টর নামেও পরিচিত, এই চিকিৎসক বলেছেন, অন্ত্রে জীবাণুর ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে ৭০টিরও বেশি বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। এরমধ্যে রয়েছে হৃদরোগ ও শ্বাসযন্ত্রজনিত অসুস্থতা। সেইসঙ্গে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো অটোইমিউন রোগও হতে পারে। আমাদের শরীর রোগ প্রতিরোধ করার ইমিউন কোষগুলোর প্রায় ৭০ শতাংশ আমাদের অন্ত্রে বাস করে এবং এই কোষগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেমের সঙ্গে প্রতিনিয়ত সংযুক্ত থাকে। বলেছেন ডা. রসি। এই কারণেই ‘যেসব মানুষের অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো তাদের ইমিউন সিস্টেম স্বাভাবিক থাকে বলেই মনে হয়’ বলেও জানান তিনি।

কীভাবে আপনি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো করতে পারেন?
কয়েক বছর আগে, ২০১৮ সালে আমেরিকান গাট প্রজেক্ট পরিচালিত এক গবেষণার পর, বিশেষজ্ঞরা অন্ত্রে মাইক্রোবায়োমের বৈচিত্র্য বাড়াতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন উদ্ভিজ্জ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে শুধু ফল ও সবজিই নয় বরং বীজ, মসলা আর বাদামও রয়েছে। ডা. রসি পরামর্শ দিয়েছেন, খাবারের রেসিপিতে ছোট ছোট অদলবদল করলে এবং বাজার থেকে বিভিন্ন প্রজাতির ফল কিনলে এই বৈচিত্র্য আনা সম্ভব। তিনি বলেন, আপনি যদি সকালের নাশতায় শস্যের তৈরি পরিজ খান তা হলে সেটা শুধু ওটস দিয়ে না বানিয়ে বাটির অর্ধেক ওটস এবং বাকি অর্ধেক রান্না করা কুইনোয়া দিয়ে খেতে পারেন, এর ওপর বিভিন্ন ফলের টুকরো ও বীজ ছড়িয়ে দিতে পারেন। আপনি যদি সপ্তাহে একবার বোলোনিজ (মাংসের ডিশ) খান তা হলে সেখানে কিছুটা মাংসের বদলে ফাইবার সমৃদ্ধ মসুর ডাল মেশাতে পারেন। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস অনুসারে, একটি ফাইবার সমৃদ্ধ বা আঁশযুক্ত খাবার আমাদের পেট ভরে যাওয়ার এমন অনুভূতি দিয়ে থাকে। ফাইবার আমাদের হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।

এ কারণে যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন অন্তত ৩০ গ্রাম ফাইবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে সাদা রুটির চাইতে হোল গ্রেইনের বাদামি রুটি বা দানাদার রুটি বেছে নিতে পারেন। সেইসঙ্গে বাদামি চাল বা আস্ত গমের পাস্তা বেছে নিলে আপনার বেশি বেশি ফাইবার খাওয়া হবে। ফাইবারের অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে আলু (যেমন: সিদ্ধ আলু) এবং ডালজাতীয় খাবার যেমন-মটরশুঁটি, মসুর ডাল বা ছোলা, যা স্টু (অনেক ঝোল দেওয়া তরকারি), তরকারি ও সালাদে যোগ করা যেতে পারে। প্রোবায়োটিক খাবার (নির্দিষ্ট ধরনের ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট) অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে-কলা, পেঁয়াজ ও পেঁয়াজ পাতা, রসুন, বাঁধাকপি, লিক, ওটস, অ্যাসপারাগাস, নেক্টারিন ফল, ব্লুবেরি ও আঙুর।

অন্ত্রের স্বাস্থ্য নিয়ে পাকিস্তানের গ্যাস্ট্রো-এন্টারোলজিস্ট ড. হানিশা খেমানি বলেছেন, আমাদের বয়স যখন বিশের কোঠায় তখন সুষম, পুষ্টি-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া বা ডায়েট করা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই জটিল সময়ে আপনি আপনার খাবারের তালিকায় কী কী রাখছেন তা আপনার দীর্ঘস্থায়ী রোগ হবে কি হবে না, তা প্রভাবিত করতে পারে। এই সময়ের খাদ্যাভ্যাস পরবর্তী জীবনে মানসিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। সেইসঙ্গে সামগ্রিক শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারে। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং বা একটানা না খেয়ে থাকা অর্থাৎ রাতের খাবার এবং সকালের খাবারের মধ্যে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা বিরতি রাখলে তা অন্ত্রের জীবাণুর উপকার করতে পারে।

কোন খাবার অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ?
অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার, অ্যালকোহল ও তামাক আপনার অন্ত্রের জন্য ভালো নয় বলে জানিয়েছেন এক বিশেষজ্ঞ। অনেক বেশি প্রক্রিয়াজাত খাবারে এমন উপাদান থাকে যা আমাদের অন্ত্রে ‘ভালো’ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে দমন করে কিংবা ‘খারাপ’ ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে দেয়। আপনি বিশ্বের কোথায় আছেন তার ওপর নির্ভর করে, আপনি রাস্তার খাবার এড়িয়ে যাবেন কি না। যদি আপনার দেশ বা শহরে রাস্তার খাবার অস্বাস্থ্যকর উপায়ে বানানো হয়, তা হলে সেই বিক্রেতাদের খাবার খাওয়া এড়িয়ে যেতে হবে। রাস্তা থেকে যদি ফল, শাকসবজি কিনে খাওয়ার আগে তা ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে যেন বিপজ্জনক ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া এড়ানো যায়। মানসিক চাপ আমাদের অন্ত্রকেও প্রভাবিত করে। এই চাপ থেকে এসিড রিফ্ল্যাক্স সহজ ভাষায় পেটে গ্যাস হওয়া এবং আলসারেশন বা পেটে জ্বালাপোড়া বাড়াতে পারে। তাই তো ডা. জনসন বলেছেন, যারা অনেক বেশি মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন তাদের অন্ত্রে বৈচিত্র্যময় মাইক্রোবায়োম কম পরিমাণে থাকে।

প্রোবায়োটিক এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য পরীক্ষা কতটা কার্যকর?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রোবায়োটিক যদি নির্দিষ্ট কারণে ব্যবহার করা হয়, তা হলে সেটা কাজ করতে পারে। ডা. মেগান রসি বলেছেন, এ ক্ষেত্রে আপনাকে এই প্রোবায়োটিক নির্দিষ্ট পরিমাণে, নির্দিষ্ট সময় ধরে এবং নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে খেতে হবে। আপনি যে প্রোবায়োটিক পণ্যটি দেখছেন সেটা আপনার অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করবেই এমন তথ্য-প্রমাণ নেই বা এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়ে বলা যায় না। বরং আমাদের কাছে যেগুলো বিক্রি করা হয় সেগুলো প্রতিদিন গ্রহণ করারও প্রয়োজন নেই। কিছু কিছু দেশে, প্রোবায়োটিক পণ্যের কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের অন্ত্রের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার প্রস্তাব দেয় এবং এ জন্য তারা গ্রাহকদের থেকে তাদের মলের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করে। ডা. রসি বলেছেন, এসব পরীক্ষায় যেসব লাভ হয় বলে কোম্পানিগুলো প্রচার করে আসলে তেমন কোনো লাভ হয় না। তবে ওই পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার অন্ত্রের জীবাণুর বৈচিত্র্য সম্পর্কে কিছু ধারণা পেতে পারেন। ব্রিটিশ ডাক্তার এবং টিভি উপস্থাপক ডা. জ্যান্ডের মতে, এই পণ্যগুলো আপনি যে পয়সা দিয়ে কিনবেন সেটার যথাযথ মূল্য পাওয়াটা কঠিন হতে পারে। তারা আপনাকে সাধারণ কিছু পরামর্শ দেবে তবে এর কোনোটাই প্রমাণভিত্তিক নয়। আমি বলব আপনার অর্থ বাঁচান এবং আপনার যদি অন্ত্রে সমস্যা হয় তবে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort