নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, আমাকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলেন যে নারায়ণগঞ্জে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচিত এক জনপ্রতিনিধি, আমাদের যে পরিচ্ছিন্নতাকর্মী তারা তাদের কষ্টের কথা বলতে ওই জনপ্রতিনিধির কাছে গেছিলো। আমাকে প্রশ্নটা এমন করা হলো যে, ভোটের আগে তো সবাইকে বাপ-মা বলে অভিহিত করেন, ভোটের পরে তুইতুকারী করলেন কেন। তাদের বলা হয়েছে যে, ‘ভাত খাইতে ভাত পাছ না, তুই ফোন পাছ কইথেকা।’ আমি লজ্জা পেয়েছি। কারণ অন্তত জননেত্রী শেষ হাসিনার আমলে কেউ ভাত না খেয়ে মরে নাই। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই যে তারা এই প্রশ্ন করে নাই যে, ট্যাক্সের ফাইলে টাকা না থাকলে এত বড় বড় বাড়ি-ঘরে থাকেন কেমনে।
বুধবার সন্ধ্যায় কানাইনগর ছোবহানিয়া স্কুল এন্ড কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এ কথ বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, যখনই গরিব মানুষের উপর আঘাত হয় আমি সেটার প্রতিবাদ করি, সে যেই দলেরই হোক না কেন। একটি রাজনীতিবিদকে যখন পুলিশের পাহাড়ায় থাকতে হয়, তখন আমার মনে হয় সে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনেক দূরে সড়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, অনেকেই বলে যে ওসমানীয় সাম্রাজ্য। কেন, আমরা নাকি গুম-খুন করে সাম্রাজ্য কায়েম করেছি। আমরা দখল করে সাম্রাজ্য করি নাই, আমরা সাম্রাজ্য করেছি মানুষের মনের ভেতর জায়গা করে। আমি কোন ওলি আউলিয়ার ছেলে না। আমার বাবা কোন ওলি-আউলিয়া ছিলেন না, খেলাফতও পান নাই; সাধারণ মানুষ ছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী পরিবারের সন্তান ছিলেন। খান সাহেব ওসমান আলীর ছেলে শামসুজ্জোহা। আমার পিতা দুই বারের এমপি ছিলেন, কিন্তু আমাদের ভাই-বোনেদের জন্য এক টাকাও রেখে যান নাই। টাকার অভাবে পরীক্ষার ফর্ম ফিল-আপ করতে পারি নাই। আমার বাবা চাইলে নারায়ণগঞ্জের অর্ধেক কিনতে পারতেন কিন্তু আমার বাবা কোন জমি দখল করেন নাই, ভূমিদাস্যুতা করেন নাই। স্বাধীনতার পরে আমার বাবা কোন কিছু লুট করে নাই, হিন্দুদের দেবত্তর সম্পত্তি লুট করেন নাই।
এমপি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে চিনেছি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে চিনেছি। আমরা আমাদের বাবার কাছ থেকে শিখেছি, শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখেছি; মানুষকে সম্মান করো, মানুষকে সম্মান করলে আল্লাহ সম্মানিত করে। তুইতুকারী আল্লাহ পছন্দ করেন না। ভোটের আগে যদি একরকম ব্যবহার করি আর ভোটের পর আরেক রকম করি; আমাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না। আমি ওই সকল পরিচ্ছন্নকর্মীদের কাছে ক্ষমা চাই। আপনারা পরিচ্ছন্নতাকর্মী কিন্তু আপনারা মানুষ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম শওকত আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল।
আরও উপস্থিত ছিলেন কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজর আলী, আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী প্রমূখ।