নোয়াখালীর সূবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগের রাতে ভোটারদের মধ্যে টাকা বিলির অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাহার ইসরাক শাবাব চৌধুরীর (আনারস) শ্বশুরকে লাঞ্ছিত করেছে স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (৭ মে) রাত ৮টার দিকে উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের কাজল মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। একই গাড়িতে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর এপিএস সুনীল কুমার দাশ ও গাড়িচালকসহ আরও চারজন ছিলেন।
শাবাব চৌধুরী নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরীর সেলিমের (দোয়াত কলম) সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে প্রার্থীর শ্বশুরকে আটকের খবর পেয়ে শাবাব চৌধুরীর সমর্থকরা ঘটনাস্থলে গেলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরীর (সেলিম) সমর্থকদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ নেতা হাসান মাহমুদসহ সেলিম চৌধুরীর তিন কর্মী আহত হয়েছেন।
খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের সমর্থকদের অভিযোগ, রাত ৮টার দিকে চরবাটা ইউনিয়নের কাজল মার্কেট এলাকায় একটি কালো রঙের গাড়ি থেকে নেমে সংসদ সদস্য একরামুল করিমের এপিএস সুনীল কুমার দাশসহ কয়েকজন স্থানীয় ভোটারদের মাঝে টাকা বিলি করছিলেন। এ ঘটনা দেখে ফেলেন যুবলীগ নেতা হাসান মাহমুদ। ওই সময় তিনি আশপাশের লোকজনকে জড়ো করে গাড়িটি ঘেরাও করেন। গাড়ির ভেতরে থাকা মো. শাহীন নামে একজন নিজেকে শাবাব চৌধুরীর শ্বশুর পরিচয় দেন।
স্থানীয়রা জানান, টাকা বিলির অভিযোগে গাড়ি আটকের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি (লাইভ) প্রচার করা হলে অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে কয়েকশ লোক জড়ো হন। তখন উত্তেজিত লোকজন মো. শাহীন ও সুনীল কুমার দাশসহ গাড়িতে থাকা লোকজনকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সূবর্ণচরের নিজ নির্বাচনী কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক সাংবাদিক সম্মেলন করেন এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী।
এতে তিনি বলেন, ‘ভোটারদের প্রভাবিত করতে রাতের বেলা টাকা বিলি করার সময় স্থানীয়রা আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীর শ্বশুরসহ কয়েকজনকে ধরে ফেলেছে। তারা কেউই এখানকার ভোটার না। বহিরাগতরা আমার নির্বাচনী এলাকায় এসে টাকা বিলি করে ভোট কিনতে চাচ্ছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুনীল কুমার দাশ বলেন, তিনি কাজল মার্কেট এলাকায় টাকা বিলি করতে যাননি। যে গাড়িটি লোকজন আটক করেছে, ওই গাড়িতে প্রার্থী শাবাব চৌধুরীর শ্বশুর ভোটের পরিস্থিতি দেখতে বেরিয়েছিলেন। টাকা বিলি করার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আতহার ইশরাক শাবাব চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে কোনো আলামত পায়নি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আইনের ব্যাঘাত ঘটে এমন কোনো ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।