রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ অপরাহ্ন

বিদেশে যাওয়ার আগেই অর্ধেক পণ্য চুরি, ৭জন গ্রেপ্তার

  • আপডেট সময় সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০২২, ৩.৪২ এএম
  • ১৫২ বার পড়া হয়েছে

গার্মেন্টস এর রপ্তানি পণ্য মাঝ পথ থেকে অর্ধেক গায়েব। বিষয়টি জানাজানিও হচ্ছে শিপমেন্ট হয়ে পন্য বিদেশে চলে যাওয়ার পর। এতে একদিকে যেমন দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে তেমনি ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে পোশাক শিল্পের। সম্প্রতি এমনই এক ভয়াবহ সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ।

রবিবার (১০ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (পিবিআই) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বিগত বছরের ৫ মে ফতুল্লা বিসিক এলাকার ফেইম এ্যাপারেলস লি. তাদের তৈরী পোষাক শিপমেন্টের জন্য বিবি খাদিজা ট্রান্সপোর্ট ও ইম্পেরিয়াল ট্রান্সপোর্ট এর চারটি কাভার্ড ভ্যান ভাড়া করে তাদের বিভিন্ন চালানমূলে ১ লাখ ১৮ হাজার ৩২৯ পিস তৈরী পোষাক যার মূল্য অনুমান ২ কোটি ৯০ লাখ ২৬ হাজার ৩৮৩ টাকা চট্টগ্রাম পোর্টে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ট্রান্সপোর্টের নিয়োজিত চালক ও হেলপারদের মাধ্যমে রাত সাড়ে ১১টায় প্রেরণ করে। পরদিন ৬ মে চট্টগ্রাম পোর্টের সিএন্ডএফ কর্তৃপক্ষ প্রেরিত মালামাল সমূহ রিসিভ করে। দেড় মাস পর ৯ জুলাই ফেইম এ্যাপারেলস লি. জানতে পারে প্রেরিত কাভার্ড ভ্যানে শিপমেন্টকৃত তৈরী পোষাকের মধ্যে ৩০ হাজার ৫৪৩ পিস তৈরী পোষাক যার মূল্য, অনুমান ৭৪ লাখ ৯২ হাজার ২৭০ টাকা নেই বলে জার্মান বায়ার তাদেরকে অবহিত করে। পরবর্তীতে ফেইম এ্যাপারেলস লি. এর পক্ষে মো. জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। যা ফতুল্লা থানার এসআই আশিক ইমরান ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত মামলাটি তদন্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে মামলাটি পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলার উপর অর্পিত হয়। পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক আ. বাতেন মিয়া মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা আ. বাতেন মিয়া ও সহযোগী এস.আই শাকিল হোসেন এবং এস.আই মো. মাজহারুল ইসলাম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ঢাকার মিরপুর, সাভারের বিরুলিয়া চট্টগামের সিতাকুন্ডু ও ফটিক ছড়ি এলাকায় ৩১ মার্চ হতে ১০ এ্রপ্রিল পর্যন্ত ১১ দিন একাধিক অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত সংঘবব্ধ চোরাই চক্রের মূলহোতাসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হল, রায়হান, মো. বিল্লাল, ফারুক, মোতালেব, কাউসার, পারভেজ ও সোহেল।

পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, মামলার তদন্তকালে গার্মেন্টস মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায় এভাবে রপ্তানির পন্য চুরি হতে থাকলে দীর্ঘমেয়াদী ঝুকিতে পরবে দেশের পোশাক শিল্প খাত। চোরাই চক্রের এসব কর্মকান্ডের ফলে বিদেশী বায়ারদের সাথে সর্ম্পকের অবনতি ঘটছে দেশের গার্মেন্টস মালিকদের। দেশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির প্রতি বিদেশী বায়ারদের আস্থাহীনতা এবং অনিশ্চয়তায় দেশের ভাবমূর্তি মারাক্তকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পাশাপাশি শিপমেন্ট বাতিলসহ নানাবিধ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে দেশের পোশাক শিল্প খাত।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সাংবাদিকদের প্রশ্নত্ত্বরে বলেন, প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মাল ছড়িয়ে ফেলে তারা। কিন্তু আমাদের আপত্তির বিষয় হলো, এটাতে চুরির মামলা হয়। কিন্তু এতে কি হয়, বছরের পর বছর মামলা চলতে থাকে। কিন্তু এতে দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট হয়ে যায়। সর্বসাকুল্লে বাংলাদেশের নামে বদনাম হচ্ছে। যেহেতু আমরা দীর্ঘদিন যাবত বায়ারদের সাথে ব্যবসা করছি, সেই ক্ষেত্রে তাদের সাথেও আমাদের একটা বিশ্বাসের জায়গা আছে।

তিনি বলেন, আমরা পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সর্বোচ্চ ব্যাক্তিদের নিয়ে কথা বলেছি যে, যাতে এটা সাধারণ চুরির মামলায় না নিয়ে স্পেশাল এক্ট তৈরী করা হয় এবং বিশেষ ট্রাইবুনারে তাদের বিচার করা হয়। কিছুদিন আগে আমার এমন কিছু পণ্য চুরি হয়েছিলো, পরে চট্টগ্রামের এক যুবলীগ নেতা আমাকে ফোন করে বলেছে সে নাকি আমার মাল উদ্ধার করে দিবে। কিন্তু কোথায় থেকে দিলো এটাই বুঝতে পারলাম না। আমি ধন্যবাদ জানাই পিবিআইকে আমি ধন্যবাদ জানাই র‌্যাবের সিইওকে, তারা অনেক সক্রিয় হয়ে কাজ করেছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort