আজ পহেলা জানুয়ারি, বুধবার খ্রিস্টীয় নববর্ষ ২০২৫ সালের শুরুর দিন। বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে বিগত ২০২৪ সালটি। একুশ শতকের পৃথিবীর বুকে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব এক গণঅভ্যুত্থানে পতন ঘটেছে হাসিনা সরকারের। বিভাজন রুখে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের মানুষ অবসান ঘটিয়েছে দীর্ঘ এক কর্তৃত্ববাদী শাসনের। এ সময়ে দৈনিক সময়ের আলো বস্তুনিষ্ঠ তথ্য প্রকাশ করে দেশের মানুষের পাশে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে।
খ্রিস্টীয় নতুন বছর-২০২৫ উপলক্ষে দেশবাসী এবং প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) নতুন বছর উপলক্ষে দেওয়া পৃথক দুটি বাণীতে শুভেচ্ছা জানান তারা।
মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘সময়ের চিরায়ত আবর্তনে খ্রিস্টীয় নববর্ষ আমাদের মাঝে সমাগত। আমাদের ব্যবহারিক জীবনে খ্রিস্টীয় বর্ষপঞ্জিকা বহুল ব্যবহৃত। খ্রিস্টাব্দ তাই জাতীয় জীবনে এবং প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ।’ তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন বছর আমাদের মাঝে বয়ে এনেছে এক নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনা। বিরাজমান বৈশি^ক অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতিতে আমি আশা করি, সচ্ছল সমাজ ও রাষ্ট্র দুস্থ, অসহায় ও পশ্চাৎপদ মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসবে। নববর্ষ উদযাপন একজনের আনন্দ যেন অন্যদের বিষাদের কারণ না হয় আমরা সেদিকেও খেয়াল রাখব।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন বছরে আমরা দুর্নীতি ও বৈষম্যহীন এক সমাজ, সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক মানবিক রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিক ও কল্যাণমুখী এক ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সঠিক পথের দিশা পাব।
পৃথক বাণীতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘নতুনের আগমনি বার্তা আমাদের উদ্বেলিত করে, নব উদ্যমে সুন্দর আগামীর পথচলার জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়। নতুন বছরের এ মাহেন্দ্রক্ষণে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উন্নতির নতুন শিখরে আরোহণে অঙ্গীকারবদ্ধ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।’ তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার লাখো শহিদের রক্ত ও গত জুলাই-আগস্ট মাসে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অর্জিত স্বাধীনতাকে সর্বদা সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করছে। আমরা দেশকে ভালোবাসব, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব এবং যেকোনো সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করব। নতুন বছরে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি, সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও জোরদার হোক, এ কামনা করে তিনি বলেন, ‘খ্রিস্টীয় নতুন বছর ২০২৫ সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি।’
২০২৪-এ দেওয়া ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে নতুন এই বাংলাদেশ। এই নতুন বছরের জন্য রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার। সাম্য, মানবিক মর্যাদা আর সামাজিক ন্যায়ের বাংলাদেশ গড়ার জন্য নতুন বছর ২০২৫ সাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্ন জোরেশোরে আলোচনায় রয়েছে।
নতুন বছরে রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সব খাত নিয়েই মানুষের প্রত্যাশা অনেক। এ প্রত্যাশা পূরণে সমাজের অন্য সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের মতো দৈনিক সময়ের আলোও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে নিজস্ব রুচি ও মননে এগিয়ে যেতে চায়। প্রত্যাশা, বিগত দিনের মতো পাঠকরা নতুন বছরেও দৈনিক সময়ের আলোর পাশে থেকে উৎসাহ জোগাবেন।