আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জোটগতভাবেই করবে ১৪ দল। জোট নেতাদের নিজ নিজ দলকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছেন জোট নেত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জোটের প্রত্যেক দলকে শক্তিশালী হতে হবে। তবেই জোট শক্তিশালী হবে। আমি আওয়ামী লীগ নেতাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেব। তারাও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জোটকে আরও সক্রিয় ও শক্তিশালী করার বিষয়ে সহযোগিতা করবে। ষড়যন্ত্রকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র আমার বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে, দলের বিরুদ্ধে এবং জোটের বিরুদ্ধেও হচ্ছে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এর মোকাবিলা করতে হবে। মঙ্গলবার গণভবনে ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। দীর্ঘ তিন বছর পর শেখ হাসিনার সঙ্গে শরিক দলের নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ১১টায় শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। টানা প্রায় চার ঘণ্টা আলোচনার পর সভা শেষ হয়। এতে জোটের প্রত্যেক দল থেকে একজন করে নেতা খোলামেলা বক্তব্য রাখেন। এ সময় দীর্ঘদিন জমে থাকা ক্ষোভও প্রকাশ করেন কেউ কেউ। পাশাপাশি করোনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্বের প্রশংসাও করেন শরিক দলের নেতারা। আলোচনায় উঠে আসে সাম্প্রদায়িক ঘটনা, হেফাজতের তাণ্ডব, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যু।
সূচনা বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপে যোগদান করায় ১৪ দলের নেতাদের ধন্যবাদ জানান তিনি। পাশাপাশি বিএনপির অংশ না নেওয়ার কঠোর সমালোচনা করে তাদের ‘নেতৃত্বের শূন্যতার’ কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একজন এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত। আরেকজন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক। কাজেই তারা ক্ষমতায় গেলে তাদের নেতৃত্ব দেবে কে? তাদের সামনে কোনো নেতৃত্ব না থাকলেও উলটাপালটা বক্তব্য তারা দিয়েই যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশন সংস্কারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণ এবং বর্তমানে ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদক্ষেপের বিষয় উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এগুলো করায় মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপি সরকারের করে যাওয়া ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটারকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথাও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, ন্যাপের কার্যকরী সভাপতি আইভী আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদৎ হোসেন, বাংলাদেশ গণআজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এসকে সিকদার, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান।