বান্দরবানে ২-৮ আগস্ট পর্যন্ত সাত দিনের ভারী বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যা এবং পাহাড় ধসে মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। মারা যাওয়াদের মধ্যে বান্দরবান সদরে ৫ জন, লামায় ২ জন, আলীকদমে ২ জন ও নাইক্ষ্যংছড়িতে ১ জন রয়েছেন।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে সাংবাদিকদের এতথ্য জানান বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন।
মারা যাওয়ারা হলেন- বান্দরবান পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালঘাটা এলাকার বাশি শীলের স্ত্রী সন্ধ্যা রানী শীল (৫২) ও তার মেয়ে বুলু শীল (২২), বান্দরবান সদর ইউনিয়নের দাঁতভাঙা পাড়ার ছায়ারাণী তঞ্চঙ্গ্যা (৩৮), টংকাবতী ইউনিয়নের তরচ্যং ম্রো (৩২) ও মো. ইউনুস (৪৭), নাইক্ষ্যংছড়ি সোনাইছড়ি ইউনিয়নের পংচা মারমা (৬৫), লামা রূপসী পাড়া ইউনিয়নের মংবাসিং মার্মা (২৮), ফাসিয়াখালী এলাকার করিমা আক্তার (৩৬), আলীকদম উপজেলায় মো. মুছা (২২) ও আব্দুল আমিন (১৮)। এদের মধ্যে পংচা মার্মা ও মংবাসিং মার্মা বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
নিহত ছায়ারাণী তঞ্চঙ্গ্যা পারিবার জানায়, গত সোমবার কাজ থেকে ফিরে পানি হাউসের পাশে তরকারি কুরাচ্ছিলেন ছায়ারাণী। এসময় পাহাড় ধসে মাটির নিচে চাপা পড়েন তিনি। অনেক খোঁজাখোঁজির শেষে চারদিন পর তার লাশ উদ্ধার হয়।
অন্যদিকে নিহত রানী শীল ও তার কন্যা বুলু শীলের স্বজনরা জানান, পাহাড়ি ঢলে চারদিকে প্লাবিত হওয়ায় সোমবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে বাশি শীলের পরিবারের সবাই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এসময় সন্ধ্যা রানী পূজা-অর্চনা এবং বুলু ঘরের বারান্দায় বসে চা পান করছিলেন। হঠাৎ পাহাড়ধসে ঘরটি চাপা পড়ে। এতে সন্ধ্যা রানী ও তার মেয়ে বুলু শীল মারা যান। পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ২ আগস্ট থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত টানা ৭ দিনের ভারী বর্ষণে জেলার প্রায় সব উপজেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। অন্যদিকে বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, বন্যা ও পাহাড় ধসে জেলার অধিকাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সর্বশেষ তথ্য পাওয়া পর্যন্ত জেলায় পাহাড় ধসে ও বন্যায় ১০ জন মারা গেছেন। যারা মারা গেছেন তাদের অধিকাংশই পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী।