সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন

বাঙালির প্রাণপ্রিয় নেতাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান: উপমন্ত্রী শামীম

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২, ৬.২৯ এএম
  • ১৩১ বার পড়া হয়েছে

‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিরঞ্জীব। একটি জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং স্থপতি তিনিই। যতদিন এ রাষ্ট্র থাকবে, ততদিন অমর তিনি। বঙ্গবন্ধুকে দৈহিকভাবে হত্যা করা হলেও তার মৃত্যু নেই। ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও বাঙালির হৃদয় থেকে সরাতে পারেনি। তাই তো আজও আগস্ট এলেই এই বাঙালি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তার পিতাকে।’

সোমবার (২৯ আগস্ট) ত্রিশালে কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এসব কথা বলেন।

উপমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে লাখো মানুষের উত্তাল সমুদ্রে বঙ্গবন্ধু বজ্রদীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এই ঘোষণায় উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত জাতি স্বাধীনতার মূলমন্ত্র পাঠ করে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছিনিয়ে আনে দেশের স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাঙালির প্রাণপ্রিয় নেতাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। বীরের বেশে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তাঁর স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু। দেশে ফিরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখার পাশাপাশি দেশের মানুষকে উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করেন বঙ্গবন্ধু। দেশ গড়ার এই সংগ্রামে চলার পথে তার দৃঢ়বিশ্বাস ছিল, তার দেশের মানুষ কখনো তার ত্যাগ ও অবদানকে ভুলে যাবে না। অকৃতজ্ঞ হবে না। নবগঠিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বঙ্গবন্ধু তাই সরকারি বাসভবনের পরিবর্তে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের সাধারণ বাড়িটিতেই বাস করতেন।

উপমন্ত্রী শামীম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে তারা একের পর এক চক্রান্তের ফাঁদ পেতেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর বিপথগামী উচ্চাভিলাষী কয়েকজন সদস্যকে ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যবহার করেছে ওই চক্রান্তেরই বাস্তব রূপ দিতে। এরাই স্বাধীনতার সূতিকাগার বলে পরিচিত ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে হামলা চালায় গভীর রাতে। হত্যা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে সামরিক শাসন জারি হয়। গণতন্ত্রকে হত্যা করে মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। শুরু হয় হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। কেড়ে নেওয়া হয় জনগণের ভাত ও ভোটের অধিকার। বিশ্বে মানবাধিকার রক্ষার জন্য হত্যাকারীদের বিচারের বিধান রয়েছে কিন্তু বাংলাদেশে জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচারের হাত থেকে রেহাই দিতে সামরিক অধ্যাদেশ জারি করে খুনি জিয়া চক্র। খুনিরা বিচারের পরিবর্তে পেয়ে যায় পুরস্কার।

উপ-মন্ত্রী শামীম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখনো বিশ্বের নির্যাতিত- নিপিড়িত মানুষের নেতা। তিনি বলেছিলেন বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত। একভাগ শাসক আরেক ভাগ শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।

আওয়ামীলীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ এই পাঁচ বছর বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনের কথা মানুষ ভোলেনি। তারা আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হামলা-মামলা দিয়ে বাড়িঘর ছাড়া করেছিলো। জাতীয় নেতা শাহ এমএস কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টারসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে নির্যাতন করে পঙ্গু করেছে। নেতাকর্মীদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের অনেক জাতীয় নেতাকে পর্যন্ত চুরির মামলা দিয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। বার বার জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায় এতিমদের টাকা মেরে খাওয়া বেগম খালেদা জিয়া আদালতে জামিন না পেয়েও বিশেষ ক্ষমতায় প্রধানমন্ত্রীর উদারতায় বাসায় থাকতে পারছেন।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করে চলছেন। তিনি প্রতিটি উপজেলা শহরে থাকা মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারিকরণ করছে। তিনি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করেছেন। পুরাতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন নতুন ভবন করে দিচ্ছেন। এজন্য জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলছেন। এছাড়া শিক্ষকদেরকেও তিনি নানাভাবে সম্মানিত করছেন। তিনি সবক্ষেত্রেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আগামী নির্বাচনেও এদেশের বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পঞ্চম বারের মতো নির্বাচিত করে ক্ষমতায় আনবেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, ডীন প্রফেসর ড. আহমেদুল বারী, রেজিস্ট্রার ড. হুমায়ুন কবীর, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মাসুম হাওলাদার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, সাইফউদ্দিন বাবু, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব প্রমূখ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort