অধিনায়কত্বের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি দলেও জায়গা হারিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। জিম্বাবুয়ে সফরের দলে নেই তিনি, নেতৃত্ব পড়েছে নুরুল হাসান সোহানের কাঁধে। তাই বলে এই ফরম্যাটে তার খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরির কোনো অবকাশ নেই। জিম্বাবুয়ে সিরিজ শেষেই আবার তাকে দলে ফেরানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। তার চাওয়া, চাপমুক্ত হয়ে খেলুক মাহমুদউল্লাহ।
দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে সোমবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে মধ্যাহ্নভোজের পর এসব বলেন টিম ডিরেক্টর। তার মতে মাহমুদউল্লাহর এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে বাংলাদেশকে।
সাংবাদিকদের খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘রিয়াদ এখনও টিমের একটা গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারের ভূমিকা পালন করতে পারে, এটা এখনও আমরা বিশ্বাস করি। সে আবার অধিনায়ক হবে কি না এটা গুরুত্বপূর্ণ না। এতদিন সে নেতৃত্ব দিয়েছে টি-টোয়েন্টি দলকে, হয়তো বা টি-টোয়েন্টি দল ওভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। আমি চাই রিয়াদ ওই চাপ থেকে বের হয়ে এসে খেলুক। ওর পারফরম্যান্স আমাদের জন্য অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ, ভবিষ্যতেও হতে পারে।’
গত শুক্রবার সিনিয়রদের বাইরে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মাহমুদউল্লাহর মতো জায়গা হয়নি মুশফিকুর রহিমের। আর সাকিব আল হাসান এই সিরিজ থেকে আগেই ছুটি নিয়েছেন। সিনিয়রদের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দেওয়া হয় সোহানকে।
মাহমুদউল্লাহ নেতৃত্ব হারালেও তাকে দল থেকে চিরতরে ছেঁটে ফেলেনি বোর্ড। খালেদ মাহমুদের বক্তব্যেই বোঝা যায়, জিম্বাবুয়ে সিরিজের পরই টি-টোয়েন্টি দলে ফিরবেন ৪৩ ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া মাহমুদউল্লাহ। পুনরায় তার নেতৃত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, আবার সোহানও এই সিরিজের পর যে অধিনায়ক থাকছেন সেটাও নিশ্চিত নয়। সেক্ষেত্রে সাকিব আল হাসানের কাঁধেই নেতৃত্ব একপ্রকার নিশ্চিত।
খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘সিনিয়ররা যেহেতু নেই, সোহান লিড করছে। সিনিয়ররা ফিরলে সেটা নাও হতে পারে। সোহানকে এই সিরিজটার জন্য অধিনায়ক করা হয়েছে। এটা না যে সোহান এখন থেকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। পরবর্তীতে আমরা অন্য কাউকে দেখতেই পারি এখানে।’
‘আমি যেটা বলছিলাম আমরা ওভাবে (মাহমুদউল্লাহর অধিনায়ক হিসেবে ফেরা না ফেরা) চিন্তা করিনি। এখন সিনিয়র ক্রিকেটাররা নেই, সোহানের মাঠের পারফরম্যান্সও খুব ভালো অধিনায়ক হিসেবে। সোহানকে এজন্য অনেকের আগেই চিন্তা করেছিলাম। লিটনের কথাও হয়েছে, আরও দুই একজনের কথা হয়েছে। কিন্তু সোহানের যে যোগ্যতা, টিমকে একসাথে রাখার, ক্যাপ্টেনের যে গুণ আমরা ওর মধ্যে দেখেছি সেটা মনে হয়েছে, সে নেতৃত্ব দিতে পারে।’- আরও যোগ করেন সুজন।
অধিনায়ককে দল পরিচালনা করতে হয় সামনে থেকে। এজন্য পারফরম্যান্স থাকা চাই দারুণ। মাহমদুউল্লাহ এদিকটাতেও বেশ পিছিয়ে ছিলেন। সবশেষ ফিফটি করেছিলেন ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। এরপর ১৩ ম্যাচের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল অপরাজিত ৩১। বিশের ঘর পেরোতে পেরেছেন মাত্র ২ বার! সবশেষ উইন্ডিজ সিরিজে তিন ম্যাচে আসে ৪১ রান! খালেদ মাহমুদ মনে করেন রান না পাওয়ায় মাহমুদউল্লাহ চাপে ছিলেন।
তার ভাষ্য, ‘আমার কথা হচ্ছে ক্যাপ্টেনরা যখন পারফর্ম করবে না, তার জন্য একটা চাপ হয়ে যায়, টিমের জন্যও। তবে অনেক সময় অধিনায়ক ব্যর্থ হবে, খারাপ করবে এটা খেলার অংশ।’
জিম্বাবুয়ে সিরিজের পরে আরব আমিরাতে আছে এশিয়া কাপ। টি-টোয়েন্টি সংস্করণের শীর্ষ এই মহাদেশীয় টুর্নামেন্টেই কি তবে দলে ফিরছেন মাহমুদউল্লাহ?