সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১১ অপরাহ্ন

বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা!

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১.১৬ এএম
  • ০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। সাবেক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন সম্প্রতি ‘সত্য উদঘাটন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসস এই প্রতিবেদনের খবর প্রকাশ করেছে শনিবার। বাসসের সেই খবরের বরাত দিয়ে গতকাল রোববার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘‘বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন হাসিনা’! গুমকা-ে দিল্লির যোগও ‘খুঁজে পেল’ মুহাম্মদ ইউনূসের তদন্ত কমিশন”। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশে অপরাধে অভিযুক্ত অনেককে গ্রেফতার না-করে গুম করে দেওয়া হত, ক্ষমতায় আসার পর এই অভিযোগ তুলেছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। এ বার তাদের তদন্ত কমিশন সেই সমস্ত গুমের ঘটনায় প্রতিবেশী ভারতের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলল। বাংলাদেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা বিএসএস এই খবর প্রকাশ করেছে।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে-ভারতের সঙ্গে হাসিনার ‘ঘনিষ্ঠতা’ প্রথম থেকেই ভাল চোখে দেখছে না ইউনূসের সরকার। তাদের তদন্ত কমিশন এ-ও দাবি করেছে, দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় করা হয়ে থাকতে পারে। সেই সব বন্দির সম্ভাব্য ভাগ্য সম্পর্কেও দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে। এই দাবির প্রেক্ষিতে দু’টি জনপ্রিয় মামলার কথা উল্লেখ করেছে কমিশন। প্রথমত বলা হয়েছে সুখরঞ্জন বালির কথা, যাকে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে তাঁকে ভারতের জেলে পাওয়া যায়। দ্বিতীয়ত, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যার অভিজ্ঞতা থেকেও ভারত-বাংলাদেশ যোগের প্রমাণ মেলে বলে দাবি। ২০১৫ সালে ঢাকা থেকে সালাউদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, পরে সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে কমিশন জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে এ বিষয়ে একটি জোরালো ইঙ্গিত রয়েছে যে, কিছু বন্দি এখনও ভারতের জেলে থাকতে পারে।
কমিশন জানায়, আমরা পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করছি যেন তারা ভারতে এখনো বন্দি অবস্থায় থাকাতে পরে এমন যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিককে খুঁজে বের করতে সাধ্যমতো চেষ্টা করে। বাংলাদেশের সীমানার বাইরে বিষয়টি তদন্ত করা কমিশনের এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, র‌্যাব গোয়েন্দা শাখায় নিয়োজিত সেনা সদস্যদের সাক্ষাৎকার থেকে দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের কার্যক্রম এবং আটক ব্যক্তিদের সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, একজন সেনা সদস্য বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ২০১১ সালের দিকে দুটি পৃথক ঘটনায় র‌্যাব গোয়েন্দা শাখা তামাবিল সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে ভারত থেকে তিনজন বন্দি গ্রহণের সময় উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সেখানে ইউনিফর্মধারী ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি ঘটনায় দুইজন বন্দিকে গ্রহণ করার পর রাস্তার পাশে হত্যা করা হয়। অন্য একটি ঘটনায়, একজন বন্দিকে জীবিত অবস্থায় গ্রহণ করে বাংলাদেশে আরেকটি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এর বিনিময়ে, র‌্যাব গোয়েন্দা শাখা বাংলাদেশের দুই বন্দিকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করে। কমিশন জানায়, সেনা সদস্য বন্দিদের নাম জানাতে না পারলেও এই ধরনের আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা পরিষেবা সমন্বয় গুমের ঘটনাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক ও আন্তঃসীমান্ত প্রকৃতি নির্দেশ করে। কমিশন মনে করে, ‘তবে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কতটা সম্পৃক্ত ছিল এবং দু’দেশের জন্য এর তাৎপর্য কী তা সম্পূর্ণরূপে বোঝার জন্য আরও বিস্তারিত বিশ্লেষণ প্রয়োজন।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort