বন্দর সংবাদদাতা :-বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামিলীগ সরকারের পতন হয়। মহাজোট সরকারের প্রধান ও আওয়ামীলীগ দলীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ভারতে পালিয়ে যান। তখন মহাজোটের নেতৃবৃন্দ দিশেহারা হয়ে পড়েন। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চারদিকে শুধু হামলা, মামলা ও লুটপাট শুরু হয়। ক্ষমতা চলে আসে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে। দেশ ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় যৌথ বাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসী ক্ষমতা নিয়ে মাঠে নামে। বিভিন্ন মামলায় তালিকাভুক্ত আসামী হন নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের চার চেয়ারম্যান। গত আওয়ামিলীগ সরকারের আমলে তাদের দূর্নীতি আর অত্যাচারে ফুঁসে উঠে বন্দর উপজেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা। ফলে ৫ আগষ্ট কলাগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার প্রধান, বন্দরের এহসান চেয়ারম্যান, মুছাপুরের মন্জু ও মদনপুরের গাজ্বী এম এ সালাম আত্মগোপন করে। তাদের নেতৃত্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর পাশবিক নির্যাতন চলে। এমনকি গুলি চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মী সহ অনেককে হত্যা ও গুম খুন করে। তাদের মধ্যে মদনপুর ইউপি গাজী এম এ সালাম চেয়ারম্যান বেপরোয়া হয়ে পড়ে। তার নেতৃত্বে মদনপুর এলাকায় ছাত্রদের মধ্যে চালায় ষ্ট্রীম রোলার। ৩ ও ৪ আগষ্ট সালাম চেয়ারম্যান বাহিনীর আক্রমণে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলরত প্রায় চার থেকে পাঁচশত ছাত্র মারাত্মক জখম হয়। অনেকে আবার গুম খুনের শিকার হয়। ফলে আওয়ামী সরকারের পট পরিবর্তনে সালাম, দেলোয়ার, এহসান ও মন্জু চেয়ারম্যান গা’ডাকা দেয়। তাদের এহেন কৃতকর্মের ফলে ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে কলাগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার প্রধান, বন্দরের এহসান, মুছাপুরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মন্জু মিয়াও মদনপুরের গাজ্বী এম এ সালামের বিরুদ্ধে হত্যা, বাড়ি ঘর ভাংচুর সহ একাধীক মামলা হয়। এরপর থেকেই তারা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হাওয়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সালামের অনুপস্থিতিতে প্যানেল চেয়ারম্যান আ: মতিন মদনপুর ইউনিয়ন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মুছাপুর ইউনিয়ন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মন্জু মেম্বার। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য চেয়ারম্যানদের নিয়মিত অফিসে পাওয়া যায় না। তারা অফিস খোলার দিন বেশীরভাগ সময়েই অনুপস্থিত থাকেন। অনেকে আবার সপ্তাহে দুই এক দিন পরিষদে বসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, কোন চেয়ারম্যানই প্রতিদিন পরিষদে সময়মতো অফিস করছেনা।
ফলে তাদের স্ব-স্ব ইউনিয়নের জনগন সকল ধরনের সেবা থেকে বঞ্চিত। জনসাধারণ তাদের চাহিদা মত সেবা পাচ্ছে না। এদের মধ্যে ধামগড় ইউনিয়ন কামাল চেয়ারম্যান ব্যাতিক্রম। নির্বাচনের শুরু থেকেই তাকে অনেক বাধা বিপত্তির মোকাবেলা করতে হয়। নির্বাচনে নমিনেশন জমা দিতে প্রতিপক্ষের বাধা, ভোট চাইতে বাধা, পোস্টার সাটাতে বাধা। নির্বাচনের দিন কেন্দ্র পরিদর্শন ও এজেন্ট প্রদান করতেও বাধা। নির্বাচিত হয়ে দলমত নির্বিশেষে ধামগড় ইউপি জনসাধারণকে নিয়ে উন্নয়নের কাজে লেগে পড়েন। প্রতিটি ওয়ার্ড মেম্বারদের নিয়ে এলাকার রাস্তা ঘাট থেকে শুরু করে মাদ্রাসা, মসজিদ, কবরস্থান, স্কুল, মন্দির সহ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন করে যাচ্ছেন । সরকারি অনুদানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও জনগনের সেবা দিয়ে আসছেন। যার কারনে কোন দলই তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার সুযোগ পায়নি। তার জন্য নিয়মিত ধামগড় ইউনিয়ন জনগনের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, চেয়ারম্যানদের নিয়মিত অনুপস্থিতির বিষয়ে খোজ নিচ্ছি। যদি কোন চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারনে জনগন সেবা থেকে বঞ্চিত হয় তবে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে চেয়ারম্যানদের দাবী আমরা নিয়মিতই ইউনিয়ন পরিষদের জনগনের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। মন্জু চেয়ারম্যান বলেন, এমন কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আমি দায়িত্ব থেকে সড়ে যাবো।