বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে ১৭ জনের মৃত্যুর ঘটনায় চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহতদের স্বজনরা রাতেই তাদের দাফন সম্পন্ন করেছে। বজ্রপাতে নিহতরা হলেন- বরের বাবা চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জনতার হাট গ্রামের শরিফুল ইসলাম (৪২), দুলাভাই চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের গোঠাগ্রামের মো. সোহবুল (৩৫), ফুফু চাঁপাই নবাবগঞ্জ ঝিলিম ইউনিয়নের জৈটকাপাড়া গ্রামের বেলিয়ারা বেগম (৩৪), ফুফা টিপু সুলতান (৪০), নানা নারায়ণপুর ইউনিয়নের মহারাজনগর ডাইলপাড়া গ্রামের মো. তোবজুল (৭০), নানি জমিলা বেগম (৬০), খালা ল্যাতন বেগম (৪৫), খালাতো ভাই মো. বাবলু (২২), মামা মো. সাইদুল (৪০), মামি টকিয়ারা বেগম (৩০), মামাতো ভাই মো. বাবু (১৫)। সূর্যনারায়ণপুর গ্রামের মো. কালুর ছেলে মো. আলম (৪৫), মোস্তফার ছেলে মো. পাতু (৪০), বরের চাচাতো ভাই সূর্যনারায়ণপুর গ্রামের ধুলু মিয়ার ছেলে মো. সজিব (২২), মো. সাহালাল ওরফে বাবুর স্ত্রী মোসা. মৌসুমী (২৫), সুন্দরপুর গ্রামের সেরাজুল ইসলামের ছেলে আসিকুল ইসলাম (২৪) ও ফেরিঘাটের লোক শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের দক্ষিণপাকা গ্রামের রফিকুল (৬০)।
গতকাল সকালে সদর উপজেলার সূর্য নারায়ণপুর গ্রামে বর আল মামুনের নানার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার নানা তবজুল ইসলামসহ পরিবারের ৬ জন নিহত হওয়ায় বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তবজুল ইসলামের বাড়ির সামনেই নিহত ৬ জনের লাশ দাফন করা হয়েছে। নিহত তবজুলের নাতনি সেলিনা খাতুন জানান, তার স্বামী সইবুর, তার পিতা শরিফুল ইসলাম পাতু, নানা-নানি, মামা-মামি ও খালাসহ ৭ জন এই মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হয়েছেন। এখন তার আশ্রয়স্থল না থাকায় তিনি পরিবারের জন্য সরকারি সহায়তা কামনা করেছেন। অপরদিকে, একই ইউনিয়নের ডাইলপাড়া গ্রামে বর আল মামুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সেখানেও চলছে শোকের মাতম।আল মামুন তার পিতাসহ ১৭ জন স্বজনকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার করে টাকা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অসুস্থদের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদেরও সহযোগিতা করা হবে।
উল্লেখ্য, বুধবার নৌকাযোগে সদর উপজেলার নারায়ণপুর থেকে বিয়ের অনুষ্ঠানে পার্শ্ববর্তী শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা এলাকায় যাওয়ার সময় বজ্রপাতে ৫ জন মহিলাসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়। এদের সকলের বাড়ি সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।