কুমিল্লায় টিকা কেলেঙ্কারি নিয়ে ফেঁসে যেতে পারেন আলোচিত সেই নারী কাউন্সিলর নাদিয়া নাসরিন। অভিযুক্ত ওই কাউন্সিলর শতাধিক নারী-পুরুষকে কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে নিজ হাতে টিকা পুশ করেন।
গত ৯ আগস্ট এ ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। শুক্রবার আলোচিত এ ঘটনার তদন্তের জন্য ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গঠিত তদন্ত কমিটিকে শনিবারের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত নাদিয়া নাসরিন কুসিকের ৪, ৫ ও ৬ সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর। গত ৯ আগস্ট নগরীর গাংচর এলাকায় নিজ কার্যালয়ে তিনি মডার্নার ওই টিকা পুশ করেন।
জানা যায়, গত ৯ আগস্ট নগরীর হারুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্রে একদল প্রভাবশালী আগে টিকা নিতে এবং দলীয় লোকজনকে টিকা দিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। এতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ জনগণ ক্ষিপ্ত হন। এ নিয়ে প্রথমে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এরপর সংঘর্ষের আশঙ্কায় কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় নাদিয়া নাসরিন বেশ কয়েকটি টিকার ভায়েল ও বেশ কিছু বিশেষ সিরিঞ্জ নিয়ে টিকা কেন্দ্রের অদূরে তার নিজের বাড়ির সামনের কার্যালয়ে চলে যান। এ সময় তার অনুসারীরাও ওই কার্যালয়ে যান। সেখানে তিনি নিজ হাতে টিকাপ্রত্যাশীদের মধ্যে করোনা টিকার (মডার্না) প্রথম ডোজ প্রয়োগ করেন।
এ বিষয়ে নাদিয়া নাসরিন সাংবাদিকদের বলেন, ৯ আগস্ট হারুন স্কুল টিকা কেন্দ্রে কর্মীদের সাথে বহিরাগতদের হাতাহাতি হয়। এরপর টিকা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে আমি টিকাগুলো আমার অফিসে নিয়ে আসি। এরপর নিজেই মানুষের শরীরে টিকা পুশ করে দেই।
অন্তত ১০০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, অতীতে আমার টিকা দেওয়ার প্রশিক্ষণ ও সনদ আছে। তাই আমি নিজেই টিকা দিয়েছি। এতে কারও কোনো অসুবিধা হয়নি।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন বলেন, টিকা প্রদান স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজ, এ কাজের জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একজন কাউন্সিলর কোনোভাবেই টিকা পুশ করতে পারেন না। টিকা পুশ করার জন্য অনুমোদিত জনবল রয়েছে। তাই বিষয়টি তদন্তে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির প্রধান হচ্ছেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার মো. হাসান মাহমুদ ও মো. ইকবাল আহমেদ এবং অপর দুই সদস্য হচ্ছেন- সিটি করপোরেশনের মেডিকেল অফিসার ডা. চন্দ্রনা রানী দেবনাথ ও সিভিল সার্জন অফিসের ইপিআই সুপারিনটেনডেন্ট আবু তাহের। কমিটিকে শনিবারের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।