রুদ্রবার্তা ২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় মারিয়া আক্তার (১৮) নামে এক নববধূর মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতদের স্বজনদের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন ছাদ থেকে ফেলে তাকে হত্যা করেছে। তবে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, পারিবারিক কলহের জেরে রাতে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন মারিয়া। এদিকে পুলিশ নিহতের স্বামী, শ্বাশুড়ি ও ভাসুরকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
নিহত মারিয়া আক্তার মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার পূর্ব শিয়লাদির দুবাই প্রবাসী শহীদ মীরের কন্যা। তার স্বামী রিফাত নগরীর মাসদাইরের ছোট কবরস্থানের শাহাদাতের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
শুক্রবার দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক মোস্তফা কামাল জানান, তারা নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেন। আত্মহত্যার দাবি ও ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ পেয়ে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠান।
এসআই মোস্তফা বলেন, নিহতের স্বামীর পরিবারের সদস্যদের মতে, বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের সাথে তার স্বামী রিফাতের ঝগড়া হয়। পরিবারের সদস্যদের মধ্যস্থতায় তা মিমাংসাও হয়। রাতে সকলে ঘুমিয়ে পড়লে তিনটার দিকে গৃহবধূ সকলের অগোচরে দরজা খুলে পাঁচতলা ভবনের ছাদে গিয়ে নিচে লাফিয়ে পরে আত্মহত্যা করে। তবে এই বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
নিহত মারিয়ার চাচা হুমায়ুন হাওলাদার জানান, তার ভাতিজি মারিয়া আক্তার আত্মহত্যা করতে পারে না। তার ভাতিজিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে। বিষয়টির সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করেছেন তিনি।
মারিয়ার মা রহিমা আক্তার জানান, মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ির আউশাহী গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. লিটনের ছেলে রিফাতের সাথে প্রেম হয় তার মেয়ের। চার মাস পূর্বে বিয়ে করে তারা। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তারা সে বিয়ে মেনে নিয়ে পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠান করে মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি পাঠায়। বিয়ের পর থেকে নানা অজুহাতে তার মেয়ের উপর নির্যাতন করতো স্বামী রিফাত। এমনকি মেয়েকে তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না। তারা মাসদাইরের ভাড়া বাসায় মেয়েকে দেখতে এলেও তাদের সাথে মেয়েকে দেখা করতে দিতো না।
রহিমা বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে তার মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে ফোন করে জানানো হয় যে, তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছে। পরে তারা এখানে এসে জানতে পারে যে তার মেয়ে মারা গেছে। নিহতের মায়ের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তার মেয়েকে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের স্বার্থে নিহত মারিয়ার স্বামী রিফাত, তার মা ও ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ধোয়াশা তৈরি হয়েছে। নিহতের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’