ফতুল্লার পাগলায় ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ে আব্দুর রাজ্জাক (১৭) নামের এক কিশোরকে আটকে রেখে নির্যাতন করার ঘটনায় ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ সময় উদ্ধার করা হয় অপহৃত কিশোর আব্দুর রাজ্জাক কে। উদ্ধার হওয়া আব্দুর রাজ্জাক পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী থানার চর মন্তাজের মো. জলিল খলিফার পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো পটুয়াখালী জেলার গলাচিপার শহিদুলের পুত্র আরুস হাওলাদার (১৯), নাছির মৃধার পুত্র ইমন (১৮), একই জেলার রাঙ্গাবালী থানার মিলন প্যাদার পুত্র সালমান (১৭), গলাচিপা থানার জহুরুল ডাক্তারের পুত্র জিহান (১৯), ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানার কবিরের পুত্র সজীব (১৯) ও একই থানার আইয়ুব আলীর পুত্র রায়হান (১৮)। তারা সকলেই পাগলা এলাকায় বসবাস করে।
শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তাদের কে ফতুল্লা মডেল থানার পাগলা প্রাপ্তি সিটির ভিতর থেকে গ্রেপ্তার সহ অপহৃত কিশোর কে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অপহৃত কিশোর আব্দুর রাজ্জাকের বড় ভাই মোঃ সজিব বাদী (২১) হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়, গ্রেফতারকৃত আসামী সালমান তাদের পূর্ব পরিচিত এবং একই গ্রামের পাশাপাশি বাড়ী। সেই সুবাদে আলোচনা সাপেক্ষে চাকুরি করার জন্য গত ১৫ দিন সালমানের এখানে আসে বাদীর ছোট ভাই কিশোর আব্দুর রাজ্জাক। পরবর্তীতে একটি প্রিন্ট কারখানায় কাজ ও নেয়।
বৃহস্পতিবার(৩ আগস্ট) সকাল ১০ টার দিকে গ্রেফতারকৃত জিহান বাদীর ভাই আব্দুর রাজ্জাকের ব্যবহৃত রেডমি স্মার্ট ফোনটি কথা বলার জন্য চেয়ে নেয়। তা নিয়ে বাথরুমে যায়। বাথরুম থেকে বের হয়ে বলে মোবাইল ফোনটি বাথরুমে পরে গিয়েছে এ জন্য সে জরিমানা বাবদ টাকা প্রদান করবে। কিন্ত মোবাইল ফোনটি জিহানের নিকটই ছিলো।
এ বিষয়টি বাদীর ভাই আব্দুর রাজ্জাক স্থানীয় বড় ভাইদের নিকট অবগত করে। এতে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুর রাজ্জাক কে মারধর করে। পরবর্তীতে শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুর তিনটার দিকে গ্রেপ্তারকৃতরা বাদীর ভাইকে চোখ বেধে পাগলা নদীর পাড়ে নিয়ে যায় এবং মারধর করে। রাত্র ১০ টার দিকে পুনরায় প্রাপ্তি সিটির ভিতরে নিয়ে আসে।
পওে গ্রেপ্তারকৃত রায়হান তার মোবাইল ফোন দিয়ে বাদীর বাবার নিকট ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবী করে অন্যথায় বাদীর ভাইকে মারধর হত্যা করা হবে বলে হুমকি প্রদান করে। বাদীর বাবার টাকা দিতে দেরী হওয়াতে বাদীর ছোট ভাই আব্দুর রাজ্জাক বাদী কে ফোন করে ২০ হাজার টাকা দিতে বলে।
বাদীর ভাই জীবন রক্ষার্থে তার সাথে থাকা ৪ হাজার টাকা গ্রেপ্তারকৃতদের হাতে তুলে দেয়। বাদী বিষয়টি জানতে পেরে জরুরী সেবা -৯৯৯ এ ফোন দিলে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনাস্থল নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে অপহৃত আব্দুর রাজ্জাক কে উদ্ধার সহ গ্রেফতার করে মুক্তিপন চাওয়া ছয় আসামী কে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আজম মিয়া (পি.পি.এম) জানান, বিষয়টি জানতে পেরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে চক্রটির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের কে গ্রেপ্তারসহ আটকে রাখা আব্দুর রাজ্জাক কেও উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে।