অনেকে হয়তো বাড়িতেও এমন খোলামেলা স্থানে ঘুমায় না। সেখানে দেশ বিদেশ থেকে নারায়ণগঞ্জে এসে চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে আছে। মানুষ গুলোর কেউ গাছের নিচে বা সেবা কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। খাওয়া দাওয়া করছে এবং নিবিগ্নে সময় কাটাচ্ছে। এখন আমাদের উচিৎ এই মানুষ গুলোর আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা ধরে রাখা।
নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে লাঙ্গলবন্দ অষ্টমী স্নান উৎসবে আগত পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে শুক্রবার (৮ এপ্রিল) বিকালে এ কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ।
তাঁর ভাষ্য মতে, ‘আমি আসার পরে নারায়ণগঞ্জের মানুষ বলছিল, এখানে মানুষ আসতে ভয় পায়। কিন্তু যাওয়ার সময় চোখ দিয়ে পানি ফেলে। কারণ এখানকার মানুষ নাকি অতিথিপরায়ন। তবে, কেমন অতিথি পরায়ন, তা এবার দেখতে চাই লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসবে অতিথিদের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চেতের মধ্যদিয়ে’।
জাতীয় মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবু সরোজ কুমার সাহার সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, অন্য স্থানেও স্নান করতে পারতো। কিন্তু কেন এত দূর থেকে এত কষ্ট করে এসেছে মানুষ গুলো? তারা এসেছে পূণ্য স্নানের আশায়। আজকে ও কালকে এখানে মানুষ স্নান করবে। স্নানের মধ্যদিয়ে শরীর পরিস্কারের পাশাপাশি মন পরিস্কার হবে। পাপ মুক্ত হবে। পরিস্কার অন্তর নিয়ে মানুষের মাধ্যমে ঈশ্বরের বার্তা পৌঁছাবে। সত্যের বাঁর্তা পৌঁছাবে, ন্যায়ের কথা বলবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধেও কথা বলবে। এতে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যাবে, মানুষের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নিবে।
মো. মঞ্জুরুল হাফিজ আরও বলেন, লাঙ্গলবন্দের এই ঘাট গুলো উন্নয়ন করার জন্য আমাদের মাননীয় এমপি মহদয় দাবি করে ছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে প্রায় ১২‘শ কোটি টাকার প্রজেক্ট এখানে নিয়েছে। কি চমৎকার এই জায়গাটি তৈরি হবে। সারা পৃথিবী থেকে মানুষ আসবে এখানে। আমাদের দেশের ভাবমূর্তি এ ভাবেই আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখে ছিলেন, একটা সুন্দর দেশ হবে। সকলে ধর্ম বর্ণ নিবিশেষে বসবাস করবো। একটি উন্নত দেশ হবে। যেখানে অভাব ও মানুষের কষ্ট থাকবে না।
ডিসি বলেন, ঝাকে ঝাকে মানুষ আসছে, দেখেই প্রাণ ভরে যাচ্ছে। গর্ব হয় যে আমি এই জেলার জেলা প্রশাসক। যেখানে সারাদেশ থেকে পূণ্য স্নানের উদ্দেশ্যে এখানে মানুষ আসে। আমাদের নারায়ণগঞ্জবাসীর দায়িত্ব এখন, যে মানুষ গুলো আত্মবিশ্বাস নিয়ে এসেছে, তাদের বিশ্বাস টুকু ধরে রাখা। এ জন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, র্যাব, সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিরা সকলেই কাজ করছে। এবং গত কয়েক দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী দু’দিনও আমাদের দেখতে হবে, মানুষ গুলোর যেন খাবার, থাকা ও পানির কষ্ট না হয়, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপনের সঞ্চালনায় আরও ছিলেন বাংলাদেশ ক্লথ মার্চেন্ট এসোসিয়েশন এর সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা, বাংলাদেশ ইয়ান মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. তোফাজ্জল হোসেন, বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম কুদরতে খুদা, বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিপক চন্দ্র সাহা, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, মুসাপার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন প্রমুখ।