সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন

‘পুলিশের নির্যাতনে’ মৃত্যু, থানা ঘেরাও আহত অর্ধ শতাধিক

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১, ৭.২১ এএম
  • ৪৩৬ বার পড়া হয়েছে

রংপুরের হারাগাছ মেট্রোপলিটন এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশি নির্যাতনে তাজুল ইসলাম ওরফে গলাকাটা তাজুল (৫৫) নামে এক আসামির মৃত্যুর অভিযোগে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটনের হারাগাছ থানা ঘেরাও করে ব্যাপক ভাংচুর করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ, টিয়ালশেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ করে। হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানা এলাকা থেকে সংঘর্ষ প্রায় অর্ধ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
এ অবস্থায় মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে রিজার্ভ দাঙ্গা পুলিশ চাওয়া হলে সেখানে পুলিশের গাড়ি পৌঁছালে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালালে সংঘর্ষ আরও বেড়ে যায়।

রাত সোয়া ৯টায় এ খবর লেখা পর্যন্ত সেখানে থেমে থেমে এই সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক ও হামলাকারীদের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৫ জনকে স্থানীয় ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর নিয়ে নানা বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার কারণে সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় হারাগাছ পৌরসভার নতুন বাজার বছিবানিয়ার তেপতী নাম স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত তাজুল ইসলাম ওরফে গলাকাটা তাজুল ওই কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ থানার দালালহাট নয়াটারি গ্রামের মৃত শওকত আলীর ছেলে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হারাগাছ পৌরসভার নতুন বাজার বছিবানিয়ার তেপতি নামক স্থানে মাদক দ্রব্যসহ তাজুল ইসলাম ওরফে গলাকাটা তাজুলকে আটক করে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার একদল পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় সে পালিয়ে যেতে দৌড় দিলে পুলিশ তাকে আটক করতে গিয়ে ওই মাদক ব্যবসায়ী আহত হয় বলে পুলিশের দাবি।

অপর দিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে পুলিশ ওই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করার সময় ব্যাপক মারধোর করলে সে ঘটনাস্থলে অচেতন হয়ে পড়ে। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ হেফাজতে সে মারা যায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে উত্তেজনাকর খবর ছড়িয়ে পড়লে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে উত্তেজিত লোকজন লাঠি সোডা ও ইট পাথর নিয়ে থানা ঘেরাও করে হামলা চালায়। প্রথমে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের ৪টি যানবাহন ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়।

এ সময় থানার প্রধান ফটক ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে থানা পুলিশ টিয়ারশেল ও গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে অতিরিক্ত পুলিশে চেয়ে বার্তা পাঠালে সেখানে রিজার্ভ দাঙ্গা পুলিশের গাড়ি গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

পুলিশও হামলাকারীদের ওপর পাল্টা গুলি ছুড়ে ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ খবর লেখা পর্যন্ত সেখানে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ চলছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আহত ও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। নিহত মাদক ব্যবসায়ীর পরিবারের সাথেও যোগাযোগ করা যায়নি।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা রংপুর-হারাগাছ সড়কের হক বাজার এলাকায় সড়কে অবস্থান করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার ওসি শওকত আলী জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort