ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন রুশ কর্মকর্তারা। এছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের ওপর সামরিক কর্মকর্তারাও সন্তুষ্ট নয়। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এফএসবি) এক সদস্য এ তথ্য ফাঁস করেছেন বলে জানিয়েছে নিউজ উইক।
ভ্লাদিমির ওসেচকিন নামের এক রুশ মানবাধিকারকর্মীর কাছে পাঠানো ই-মেইলে এফএসবির এক কর্মী এসব তথ্য ফাঁস করেছিলেন। গুলাগু ডটনেট নামে দুর্নীতিবিরোধী একটি ওয়েবসাইট পরিচালনা করেন ভ্লাদিমির ওসেচকিন। বর্তমানে তিনি ফ্রান্সে নির্বাসনে আছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর এফএসবির অভ্যন্তরে যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল, সে সম্পর্কে নিয়মিত ওসেচকিনকে লিখে পাঠাতেন ওই কর্মী।
ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান উইন্ড অব চেঞ্জ রিসার্চ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ইগর সুশকো রুশ ভাষায় লেখা এ সংক্রান্ত ই-মেইলগুলো ইংরেজিতে ভাষান্তর করেছেন। এসব ভাষান্তর তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনলাইন সাময়িকী নিউজ উইককে দিয়েছেন।
১২ এপ্রিল পাঠানো এক চিঠিতে এফএসবির ওই কর্মী লিখেছেন, পুতিনের পারমাণবিক হামলা যুদ্ধে ‘কিছুই অর্জিত হবে না’ এবং ‘এমন পরিণতি হতে পারে যে সেগুলি বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি লিখেছেন, কখনও পারমাণবিক হামলার আদেশ দেওয়ার চেষ্টা করলে ক্রেমলিনের মধ্যে একটি চেইন অব কমান্ড পুতিনকে বাধা দেবে।
বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে ওই গোয়েন্দা সদস্য লিখেছেন, ‘…এর জন্য জড়িত প্রত্যেকের সম্মতির প্রয়োজন হবে (পরমাণু হামলা চালানোর জন্য), যা জটিল বলে মনে হচ্ছে। তারপর চাহিদার সঙ্গে প্রযুক্তিগত ক্ষমতার সামঞ্জস্য প্রয়োজন হবে এবং এখানে সবকিছুই জটিল।’
যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার কোনো কার্যকর কৌশল নেই উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের কোনো কৌশল নেই…দুই সপ্তাহ আগে যেমন আশা করা হয়েছিল, বর্তমান সঙ্কট দেশের শীর্ষ নেতৃত্বকে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নিতে এবং পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে বাধ্য করবে এবং বর্তমান পরিস্থিতির বাস্তব সমাধান খোঁজা হবে।’
যুদ্ধের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর পুতিন যে ভেঙে পড়েছেন তা উল্লেখ করে রুশ গোয়েন্দা লিখেছেন, ‘কিন্তু এর পরিবর্তে আমরা এমন একজন খেলোয়াড়ের আচরণ দেখছি, যিনি উত্তেজনায় ভেঙে পড়েছেন এবং যে কোনও মূল্যে তার হেরে যাওয়া বাজি জেতার চেষ্টা করছেন। তাকে থামানোর কেউ নেই এবং তার চারপাশ এতে যুক্ত।’