স্টাফ রিপোর্টারঃ সোনারগাঁয়ে সালমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ওই গৃহবধূর স্বামী পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে বাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুরে লাশটি ফেলে দেয়। পরকীয়ার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে দাবি করেন নিহতের পরিবার।
গতকাল শুক্রবার সকালে পৌরসভার ভট্টপুর এলাকায় সোনারগাঁ থানা পুলিশ বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় ঐ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার পর নিহত গৃহবধূর স্বামী মোহাম্মদ রূপচাঁন ও তার ভাই সুলতানকে আটক করেছে পুলিশ। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রিপন খান বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সোনারগাঁ পৌরসভার তাজপুর গ্রামের সালাউদ্দিন মিয়ার মেয়ে সালমা বেগমের সাথে ভট্টপুর গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ রূপচানের ২০০৫ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে আবদুল্লাহ আরবান কাইফি(১৬) ও খাদিজা আক্তার (৭) নামের দু’টি সন্তান রয়েছে।
২০২২ সালে মেঘনা গ্রুপে চাকুরির সুবাদে এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে মোহাম্মদ রূপচান। ওই মেয়েকে বিয়ে করার জন্য সে বহুবার চেষ্টা করে। বিষয়টি তার স্ত্রী সালমা বেগম জানার পর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। রূপচাঁন প্রায়ই সালমা বেগমকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। এছাড়াও তাদের পরিবারে বিভিন্ন সময়ে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকত। গত বৃহস্পতিবার রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়। অভিযোগ উঠে, ওই রাতে কোন এক সময় সালমা বেগমকে তার স্বামী রূপচাঁন শ্বাসরোধ করে হত্যার পর পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে তার লাশ ফেলে দেয়। পরে সে পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে এলাকায় প্রচার করার চেষ্টা করে।
নিহতের বড় ভাই রিপন খাঁন জানান, পরকীয়ার জের ধরে তার বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে স্বামী রূপচাঁন। হত্যার পর লাশ পুকুরে ফেলে দিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তার বোন সাঁতার জানতো। কিভাবে পানিতে ডুবে মারা যাবে, এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন তিনি।
সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মহসিন জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী রূপচান ও তার ভাই সুলতানকে আটক করা হয়েছে।