নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকে তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনায় এসে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলে গেছেন, তৈমূরকে রাস্তায় নামতে দেয়া হবে না। একদিকে সরকারদলীয় প্রার্থী ও তার দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এসে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বুলি আওড়াচ্ছেন, অপরদিকে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে আমার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হওয়ায় কর্মী সমর্থকদের পরোক্ষভাবে হুমকি-ধামকি দেয়াসহ পোষ্টার ছিড়ে ফেলার সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
রোববার (৯ জানুয়ারি) বিকালে নগরীর মাসদাইরে তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে ৮ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারী দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এসে গোয়েন্দা রিপোর্টের ফলাফল বলে সম্মানীত ভোটারদের অসত্য তথ্য দিচ্ছেন, যা কোন স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে হলে ওই নেতাকে আইনের সম্মুখিন হতে হতো। সরকারীদলের মূখপাত্ররা ও সাধারণ সম্পাদক অবলিলায় বলে দিচ্ছেন তাদের প্রার্থী জয়ী হবে, যে কোন মূল্যে জয়ী করা হবে। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রেফারেন্স দিয়ে স্থানীয় পত্র পত্রিকায় বলা হচ্ছে নৌকা লক্ষাধিক ভোটে জিতবে। যা পক্ষান্তরে নির্বাচন কমিশন ও জনগনকে প্রভাবিত করার সামিল।
হাতি মার্কার স্বতন্ত্র এই মেয়র প্রার্থী বলেন, আমি বিশ্বাস করতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ধরণের কথা বলেননি। তার নামে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালেই বলেছেন তৈমুর বিজয়ী হওয়ার মত প্রার্থী। অথচ গত ৮ জানুয়ারী সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী আমাকে নিয়ে তার নিজদলের একজন এমপি ও জাতীয় পার্টির একজন এমপিকে জড়িয়ে যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করেছেন সে ব্যাপারে কিছু না বললেই নয়। তাই সঙ্গত কারণেই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নগরবাসীর শরনাপন্ন হয়েছি।
তৈমূর আলম বলেন, সরকার দলীয় মেয়র প্রার্থী বারংবার আমার বক্তব্যকে মিথ্যাচার বলে আখ্যা দিচ্ছেন। অথচ আমিও প্রতিবারই বলছি আমার বক্তব্য সাধারণ মানুষেরই বক্তব্য। সরকারদলীয় প্রার্থীর অবস্থান এতটাই নড়বড়ে হয়ে গেছে, হাতি মার্কা আজ জনতার মার্কা হয়ে গেছে। সরকারদলীয় প্রার্থীর পায়ের নিচে মাটি এতটাই সরে গেছে যে, পুলিশ প্রশাসনের লোকদিয়ে ভয়ভীতি আর জোর করে সরকারদলীয় নেতাদের মাঠে নামাতে হচ্ছে। আমার দলসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী সম্প্রতি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যারা জনতার মার্কা হাতি মার্কার পক্ষে প্রচারনা চালাচ্ছেন এবং যারা সরকারী মার্কার পক্ষে নির্বাচন করছে না, শনিবার (৮ জানুয়ারি) রাত থেকেই তাদের বাড়ীতে ট্রাক ভর্তি করে পুলিশ পাঠিয়ে সরকারী মার্কার পক্ষে নির্বাচন করার জন্য অযাচিতভাবে হুমকি ও হয়রানী প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী পথসভায় অংশগ্রহণ করায় ধামগড় ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কামাল হোসেনের বাসভবনে হয়রানীমূলক তল্লাশী করাসহ তার কর্মচারীকে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে। একইভাবে ২৭টি ওয়ার্ডে আমার সমর্থক ও নির্বাচন পরিচালনায় নেতৃবৃন্দকে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দ্বারা হয়রানী করা হচ্ছে। যা সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রধান অন্তরায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি ও নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম আসলাম, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিম জুয়েল, মহানগর শ্রমিকদলের সভাপতি এস এম আসলামসহ বিপুল সংখ্যাক দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থক।