রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন

নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান তারেক রহমানের

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৫, ১০.২৯ এএম
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণকে নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত স্বচ্ছ, জনগণ কোন রাজনৈতিক দলকে গ্রহন করবে কিংবা বর্জন করবে, নির্বাচনের মাধ্যমে সেই রায় দেবে জনগণের আদালত। তবে যারা জনগণের আদালতের রায়ের মুখোমুখি হতে ভয় পায় কিংবা যাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে তারাই নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে নানারকম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।

গণতন্ত্রকামী জনগনের প্রতি আহ্বান, আপনারা ধর্য্য হারাবেন না, নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকুন। নির্বাচন কমিশন তাদের অর্পিত দায়িত্ব যথারীতি পালন করবে সেই বিশ্বাস রাখুন। দলের নেতা-কর্মৗদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, আপনারা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। বরং সর্তক থাকবেন। নিজেরা এমন কোনো কাজে সম্পৃক্ত হবেন না যাতে কেউ অপপ্রচারের সুযোগ পায়।নিজেদেরকে জনগণের আস্থায় রাখুন। জনগণের আস্থায় রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। গতকাল বুধবার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। তারেক রহমান বলেন, আমাদের সকলকে খেয়াল রাখতে হবে, কোনো হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে যাতে গণঅভ্যুত্থানের আকাংখা বিনষ্ট হবার পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। এব্যাপারে ছাত্র দলের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে সর্তক ও সজাগ থাকতে হবে। মনে রাখা দরকার লোক বা লাভের উধর্বে উঠে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ এবং স্বাবলম্বী বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ করে ছাত্র-তরুনদের ভূমিকা অপরিসীম।

সংস্কার কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনো কোনো মহল থেকে সংস্কার নাকি নির্বাচন এই ধরনের জিজ্ঞাসাকে বিএনপি তথা দেশপ্রেমিক সকল মানুষ, সকল রাজনৈতিক দল শ্রেফ অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কূট তর্ক বলেই বিবেচনা করে। বরং আমাদের দল বিএনপি মনে করে রাষ্ট্র, রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দলের গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার এবং নির্বাচন উভয়ই প্রয়োজন। বিদ্যমান ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করতে সংস্কার একটি অনিবার্য ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। একইভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে টেকসই এবং প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে নির্বাচনই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর পন্থা। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার প্রয়োগের যে সুযোগটি পায় যেটি রাষ্ট্র-জনগণের রাজনীতির ক্ষমতা নিশ্চিত করে।

বিএনপি প্রধান বলেন, বিএনপি মনে করে রাষ্ট্রে জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা না গেলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার কিংবা পূঁথিগত সংস্কার শেষ পর্যন্ত কোনো কিছুই টেকসই হয় না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে, সংস্কার কার্যক্রম অবশ্যই প্রয়োজন। এই কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়ত তাদের দৃষ্টিতে অনেক বড় বড় সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তবে এই সব কর্মসূচির আড়ালে জনগণের নিত্যদিনের দুদর্শা উপেক্ষিত থাকলে জনগণ হয়ত ক্ষোভ সরকারের সংস্কার দাবি নিয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জনগণের মনে প্রশ্ন উঠেছে পলাতম স্বৈরাচারের আমলে সৃষ্ট বাজার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার ভেতর আনতে সরকার কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে। ফ্যাসিস্ট আমলে দায়ের করা লক্ষ লক্ষ মামলায় এখনো কেনো প্রতিদিন মানুষকে আদালতের বারান্দায় ছুটোছুটি করতে হচ্ছে। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিএনপি বার বার যেকথাটির ওপরে জোর দিতে চায় সেটি হলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সংস্কার কিংবা গৃহীত পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার নির্ধারণে ব্যর্থতার পরিচয় দিতে চাইলে ষড়যন্ত্রকারীর ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট বিনষ্ট করার সুযোগ নেবে। এরই মধ্যে তারা একাধিকার বার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টা চালিয়েছে। হাজারো ছাত্র জনতার রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা দেশে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি দেখতে চায় না। এই কারণে জনগণের পক্ষের রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এই সরকারের প্রতি অব্যাহত রেখেছে।

গণতান্ত্রিক উদ্যোগকে বিএনপি স্বাগত জানায় মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্র, রাজনীতি, সরকার প্রচলিত বিধি ব্যবস্থা সংস্কার করে আরও উন্নত বিধি ব্যবস্থার পক্ষে ছাত্র-তরুনরা অবস্থান নেবে সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে- দেশের তরুন জনশক্তি ভূমিকা রাখতে এটাই স্বাভাবিক এটাই তারুণ্যে ধর্ম। দেশে প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটবে এটাই গণতান্ত্রিক রীতি, এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রয়োজনে বিএনপি সকল গণতান্ত্রিক উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।বিএনপি তার জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সকল পরিস্থিতিতে সকল সময়ে বহু দল ও মতের চর্চার পক্ষে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে ছাত্র দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, তোমাদেরকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে শিক্ষার্থীরা জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে প্রধান হাতিয়ার। রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। তবে শিক্ষার্থী হিসেবে তোমাদের প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য হতে হবে লেখাপড়া, লেখাপড়া এবং লেখাপড়া। লেখাপড়ার পাশাপাশি তোমরা নিজেদেরকে জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমের সাথে সস্পৃক্ত রাখো। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজেকে একজন আদর্শ শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হও। শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবক আামাদের প্রত্যেকের মনে রাখা জরুরী আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীর বাংলাদেশ। সুতরাং শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষা-দীক্ষায়, জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করা না গেলে নিশ্চিতভাবে হয়ত আবারো পথ হারাবে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আমান উল্লাহ আমান, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, রাকিবুল ইসলাম বকুল, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, রাশেদ ইকবাল খান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ঢাকা বিশ্ববিদ্য্যালয় ছাত্র দলের গণেশ চন্দ্র রায় সাহস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort