রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল মঙ্গলবার। এদিন সকাল ১০টার পর থেকে দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এর আগের দিন রাতে একটি খাবারের দোকানের কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বচসা হয়।
এর জের ধরে মধ্যরাতেও হয়েছিল টানা তিন ঘণ্টার সংঘর্ষ। এরপর সকাল ১০টার আগ পর্যন্ত গোটা এলাকা ছিল মানবশূন্যহীন ভূতুড়ে পরিবেশ। এরপর দুপক্ষের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, টায়ারে অগ্নিসংযোগ, লাঠি-রড হাতে ধাওয়া-পালটাধাওয়া এবং পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপে ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে আহত একটি কুরিয়ার সার্ভিসের ডেলিভারি বয় নাহিদ হোসেন (২০) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এছাড়া নয়জন গণমাধ্যমকর্মীসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগামী ৫ মে পর্যন্ত ঢাকা কলেজের সব হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলা হয়েছে। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার রাতে পুলিশ সঠিক সময়ে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেও মঙ্গলবার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অনেক দেরিতে। এ কারণে অবস্থা বেশি খারাপ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই। তাদের প্রশ্ন-রাতের এই সংঘর্ষ পরের দিন (মঙ্গলবার) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গড়াল কেন?
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতারা অথবা ঢাকা কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্তরা এ ঘটনা দ্রুত থামাতে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিলেন না কেন? চলমান রমজানে প্রচণ্ড গরম, সংঘর্ষে সৃষ্ট অসহনীয় যানজট মারিয়ে রাস্তায় বের হয়েছিল অসংখ্য মানুষ। অনেকে এসেছিলেন আসন্ন ঈদুল ফিতরের কেনাকাটা করতে।
দীঘস্থায়ী সংঘর্ষে রাস্তাঘাট বন্ধ থাকায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ প্রায় দুই বছর করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরাও ঈদকে সামনে রেখে বেচাকেনা নিয়ে মহাব্যস্ত ছিলেন। এ সময় একেবারেই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন সংঘর্ষের ঘটনাটিকে নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। পুরো ঘটনার নির্মোহ অনুসন্ধান চালিয়ে এর দায় কার-তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ীদের আইনের মুখোমুখি করা হবে। এদিকে দুপুরের পর থেকে নিউমার্কেট এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে ইডেন ও বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
হল বন্ধ ঘোষণা : ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগামী ৫ মে পর্যন্ত ঢাকা কলেজের সব হল বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিকালের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলা হয়েছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক এটিএম মইনুল হোসেনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ থেকে ৫ মে (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ঢাকা কলেজের হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হলো।
এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে (মঙ্গলবার) বিকালের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। পরে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ও টিয়ারশেল ছুড়ে দোকান কর্মচারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়ে রাস্তার নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপরও সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে পুলিশ-ব্যবসায়ীদের মধ্যে ধাওয়া, পালটাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় (রাত ৮টা) গোটা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।
এদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষের হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে ছাত্ররা। আন্দোলনকারীদের প্রধান সমন্বয়ক ইসমাইল সম্রাট বলেন, কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। কাল সকাল ১১টায় আমরা নীলক্ষেতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করব।
নিউমার্কেট জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার শাহেন শাহ জানান, সোমবার মধ্যরাতে নিউমার্কেট এলাকায় একটি খাবারের দোকানে ‘দাম দেওয়া-নেওয়া নিয়ে’ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। রাতে ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পালটাধাওয়া হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মধ্যরাতের সংঘাতের পর থমথমে পরিস্থিতির মধ্যে মঙ্গলবার সকালে আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে নিউমার্কেটের দোকান কর্মচারী এবং ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হন।
রাতের সংঘর্ষের সময় আহতদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থীসহ চারজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। মোশাররফ হোসেন নামে ম্যানেজমেন্ট চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীকে স্কয়ার হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়েছে জানিয়ে উপকমিশনার শাহেন শাহ বলেন, তার অবস্থা এখন ‘স্থিতিশীল’। তিনি বলেন, নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখেছে। আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে।
পুলিশ জানায়, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা রাতের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মানববন্ধন করতে রাস্তায় জড়ো হয়। এ সময় ব্যবসায়ীরা বেরিয়ে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়। কলেজের সামনের সড়কে লাঠি, রড হাতে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের ঢিল ছুড়তে দেখা যায়। অন্যদিকে আনারকলি মার্কেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে থাকা দোকান কর্মচারীরা পালটা জবাব দেয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার যাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয় তাদের মধ্যে আছেন কাজী সুমন (২৫), কবির (৩৮), সাজ্জাদ (৪৫), সাগর (১৮), আপেল (৩৫), রাজু (১৬), রাসেল (১৪), রাহাত (১৮), অলিফ (২২), মহিউদ্দিন (২৬), রুবেল (২৫), আরাফাত জামান (১৮), ইয়াসিন (১৭), নাজমুল (২০), রায়হান (১৭), রাসেল (২৬), হৃদয় (১৮), মেহেদী (১৮), রিমা (২০), মুন্না (২২), নাসির (২৪), আকাশ (২২) প্রমুখ।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় দুপুর পর্যন্ত আমাদের এখানে ৪০ জন রোগী এসেছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই দুজনসহ চারজনকে ভর্তি রেখে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকিটি রেসপন্স টিম তৈরি করে অন্য আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যাদের ভর্তি রাখা হয়েছে তারা হলেন দোকান কর্মচারী মোরসালিন, ইয়াসিন, অজ্ঞাত পুরুষ (২৫) ও শিক্ষার্থী কানন চৌধুরী। আহত কানন ঢাকা কলেজ দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। দাকান কর্মচারী মোরসালিনের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকন্দিতে।
সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে হাজার হাজার দোকান কর্মচারী লাঠি আর ইট নিয়ে রাস্তায় অবস্থান করছিল। আর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের অবস্থান ছিল কলেজ ফটকের সামনে এবং হলের ছাদে। রাস্তায় অনেকের হাতে লাঠি আর মাথায় হেলমেট দেখা গেছে। ঢিল বৃষ্টির মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ছুড়েছে পুলিশ। কয়েকটি বিস্ফোরণের আওয়াজও পাওয়া যায়। আগের রাতের সংঘর্ষের পর থেকেই সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় থেকে নিউমার্কেট পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। সকালে সংঘর্ষ শুরুর পর রাস্তায় কাঠসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র জড়ো করে তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, সবপক্ষকে শান্ত করে রাত ৪টার দিকে আমরা বাসায় ফিরেছিলাম। আমরা ছাত্রনেতাদের কথা দিয়েছিলাম যে, ব্যবসায়ীরা আর সংঘর্ষে জড়াবে না। কিন্তু সকালে ছাত্ররা আবার সড়ক অবরোধ করে। ফলে পাশে চাঁদনী চক, গাউছিয়া ও অন্যান্য মার্কেটের ব্যবসায়ীরা আবার একত্রিত হয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।
এদিকে এই ঘটনার জের ধরে সেই এলাকায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নিউমার্কেট মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য রাজ্জাক জানান, মূল সড়ক বন্ধ থাকায় যানবাহনকে ঘুরে যেতে হচ্ছে। তাতে আশপাশের সব সড়কে চাপ পড়ছে। নীলক্ষেতের দিকে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে।
নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির নেতা শাহীন আহমেদ বলেন, নিউমার্কেটের ৪ নম্বর গেটের কাছে একটি খাবারের দোকান থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত। ওই খাবারের দোকানের লোকজনের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থীর বাগবিতণ্ডার পর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধ হয়ে হামলা চালায়। রাতে ছাত্ররা অগ্নিসংযোগেরও চেষ্টা করে, কয়েকটি দোকানে লুটতরাজ চালায়।
সাখাওয়াত হোসেন নামে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, চতুর্থ বর্ষ আর মাস্টার্সের তিনজন শিক্ষার্থী রাতে খেতে যায়। দাম যা আসছে তার চেয়ে একটু কম দিতে চেয়েছিল তারা। এ সময় ঝগড়ার এক পর্যায়ে দোকানে থাকা ধারালো ছুরি নিয়ে শিক্ষার্থীদের গুরুতর জখম করে দোকানিরা। এই খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা গিয়ে ভাঙচুর চালায়। এরপর ব্যবসায়ী ও পুলিশ ধাওয়া দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে দেয়। এরপর রাতে কয়েক দফায় পালটাপালটি সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
সাংবাদিক আহত : রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৯ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন ইটের আঘাতে জখম হয়েছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজনকে হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়েছে হেলমেটধারীরা।
সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ঢাকা পোস্টের সিনিয়র রিপোর্টার জসীম উদ্দীন মাহির চোখে এবং মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার ইকলাচুর রহমান হাতে আঘাত পেয়েছেন। এছাড়া হেলমেটধারীরা দৈনিক আজকের পত্রিকার রিপোর্টার আল আমিন রাজু ও ডেইলি স্টারের ফটোগ্রাফার প্রবীর দাসকে পিটিয়েছে। দীপ্ত টিভির রিপোর্টার আসিফ সুমিত, এসএ টিভির রিপোর্টার তুহিন, ক্যামেরাপারসন কবির হোসেন, আরটিভির ক্যামেরা পার্সন সুমন দে, মাই টিভির রিপোর্টার ড্যানি ড্রং ইট-পাটকেল ও হকিস্টিকের আঘাতে আহত হয়েছেন।
এদিকে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ এবং ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন এক বিবৃতিতে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ইডেন ও বাঙলা কলেজ শিক্ষার্থীদের মিছিল : নিউমার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সমর্থনে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন বাঙলা কলেজ ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিকালে বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে এসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ইডেন কলেজের ছাত্রীরা নীলক্ষেত মোড়ে জড়ো হন। এ সময় তারা উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ঢাকা কলেজে হামলা কেন ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মিছিল নিয়ে নিউমার্কেটের দিকে এগিয়ে গেলে ব্যবসায়ীরা ধাওয়া দেন ছাত্রীদের। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে পিছু হটেন ব্যবসায়ীরা।
ইডেন কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগের ছাত্রী ঐশ্বর্য মন্ডল বলেন, নিউমার্কেটে কিছু কিনতে গেলে ব্যবসায়ীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। যে কোনো বিপদে ঢাকা কলেজের ভাইয়েরা আমাদের জন্য এগিয়ে আসেন। তাই আজ তাদের বিপদেও আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমরা এ হামলার বিচার চাই।
মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ : ব্যবসায়ী ও ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে নিউমার্কেট এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওই কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার বিকাল থেকে সরকারি নির্দেশে নিউমার্কেট এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে ফিক্সড ইন্টারনেট (আইএসপি) সেবা যথারীতি চালু আছে বলে জানিয়েছেন আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক। তিনি বলেন, ইন্টারনেট বন্ধের কোনো সরকারি নির্দেশনা এখনো আমরা পাইনি।