সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

নাসিক নির্বাচনে করোনা যোদ্ধাদের প্রতিদান দিয়েছে জনগণ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২২, ৩.৪৮ এএম
  • ৩৭১ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের ভোটের সমীকরণে সবচেয়ে বেশী প্রাধান্য ছিল করোনা মহামারিকালে কার কি ভূমিকা ছিল। বিশেষ করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই একটি ইস্যুই সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছিল ভোটের মাঠে।

সেই ভূমিকারই প্রতিদান স্বরূপ পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন করোনা যোদ্ধা খ্যাত নাসিকের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও জনগণ ঠিকই সেই প্রতিদান দিতে ভুল করেননি।

জানা গেছে, রেডজোন খ্যাত নারায়ণগঞ্জে করোনাকালে যে কাউন্সিলর উঠে এসেছিলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গন মাধ্যমে তার মধ্যে অন্যতম হলেন করোনা বীর উপাধি পাওয়া নাসিকের ১৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকুসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ।

নিজের রাজনৈতিক পরিচয় ছাপিয়ে কাউন্সিলর খোরশেদ তার ভূমিকা দিয়ে স্বতন্ত্র একটি পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছেন করোনাকালে। স্থানীয়রা যখন করোনা আক্রান্ত রোগীর লাশ দাফনে ভীত ছিলেন তখন এগিয়ে আসেন কাউন্সিলর খোরশেদ। করোনাকালে শত শত লাশ দাফনে তার টিম খোরশেদ মাঠে ছিলেন শেষ অবধি। স্বজনরা এগিয়ে না আসায় মুসলমান হয়েও অনেক হিন্দু লাশের মুখাগ্নি করেছেন এই করোনা যোদ্ধা।

টেলি মেডিসিন, অক্সিজেন সরবরাহ কিংবা করোনা হাসপাতালে রোগীদের দেখভাল করার মত কাজটিও করেছে তার টিম। শুধু নারায়ণগঞ্জই নয়, দেশের অনেক জেলার করোনা আক্রান্ত লাশের দাফনও করেছে টিম খোরশেদ। এছাড়া সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি নিজের অর্থায়নে, অনুদানের ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন ঘরে ঘরে। সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তৃতীয়বারের মতো সিটি করপোরেশনে জয়ী হয়েছেন তিনি।

নাসিকের আরেক করোনা যোদ্ধা ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকুকেও তার কর্মের প্রতিদান দিয়েছেন তার ওয়ার্ডের ভোটাররা। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ করোনা হাসপাতালটি ( খানপুর ৫শ’শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল) তার নিজের ওয়ার্ডে হওয়ায় তার ভূমিকা ছিল স্মরণীয়। লাশ দাফন, ত্রাণ বিতরণ, মাস্ক বিতরণ, করোনা রোগীদের দেখভাল করা, তাদের মাঝে নিজ অর্থায়নে পুষ্টিকর খাবার,অক্সিজেন সরবরাহ করার মত বহু কাজ করেছেন এই কাউন্সিলর। কাজ করতে গিয়ে তিনিও আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনায়।

করোনাকালে নারায়ণগঞ্জে নারী কাউন্সিলরদের মাঝে যিনি আলোচিত হয়েছিলেন স্থানীয় ও জাতীয় মিডিয়ায় তিনি হলেন সাবেক প্যানেল মেয়র ও ১৩, ১৪, ১৫নং ওয়ার্ডের নারী (সংরক্ষিত) কাউন্সিলর শারমিন হাবিব বিন্নি। এবারও তাকে হ্যাট্রিক বিজয়ী করেছেন ওয়ার্ডের ভোটাররা। করোনার শুরু থেকে মাস্ক বিতরণ, পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পাশাপাশি দিন রাত ওয়ার্ডবাসীকে ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন এই নারী কাউন্সিলর।

সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি নিজের অর্থায়নে ত্রাণ দিয়েছেন, প্রতি রাতে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছেন ছিন্নমূল মানুষের মাঝে। সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের চেয়ে তার পরিশ্রম ছিল ৩গুন বেশি। কারণ, নারী (সংরক্ষিত) কাউন্সিলর হওয়ায় তাকে কাজ করতে হয়েছে একসঙ্গে ৩টি ওয়ার্ডে। মহামারীতে কাজ করতে গিয়ে সপরিবারে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থা থেকে ফিরে এসেছিলেন জীবনের স্রোতে। ওয়ার্ডবাসীও তাকে আবারও জয়ের মালা উপহার দিয়েছে।

মহামারীতে যার অবদান এখনও ১৭নং ওয়ার্ডবাসীর মনে গেঁথে আছে তিনি হলেন আবদুল করিম বাবু। শুধু সরকারি ত্রাণই নয়, নিজের অর্থায়নে এই কাউন্সিলর ত্রাণের পাশাপাশি নিজের খামারের মাছ পৌঁছে দিয়েছেন কমপক্ষে ৫ হাজার ঘরে। যা দৃষ্টান্ত হয়ে আছে এই ওয়ার্ডের মানুষের কাছে। এছাড়াও রান্না করা খাবার পৌঁছে দিয়েছেন দরিদ্র বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে। পুরো ওয়ার্ডে কোন বাড়ীতে যাননি বা খোজ নেননি এমন বাসিন্দা খুঁজে পাওয়া যাবে না এই ওয়ার্ডে। কট্টর বিরোধীরাও কাউন্সিলর বাবুর করোনাকালের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

বিশুদ্ধ খাবার পানির হাহাকার থাকায় নিজের ওয়ার্ডে ১১টি গভীর নলকূপ স্থাপন করেছেন নিজ অর্থায়নে। কাউন্সিলর বাবুও সপরিবারে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো তাই আবারো জয়ের মালা উপহার দিয়েছে ভোটাররা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort