যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ঢাকা- নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের ৫০০ মিটার রাস্তা। সড়ক জুড়ে সৃস্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। তবুও জীবন -জীবিকার তাগিদে ঝুকি নিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষকে বিভিন্ন যানে চড়ে চলাচল করতে হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে। বড় বড় গর্তগুলো মৃত্যু কুপে পরিনত হয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচল করে একেবারে ধীর গতিতে। ফলে যানজট সারাক্ষনই লেগে থাকে। দুই মিনিটের এই পথ পাড়ি দিতে কখনো কখনো এক ঘন্টারও বেশী সময় পার হয়ে যায়। আবার গর্তে পড়ে উল্টে যেতে দেখা যায় ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক, অটোরিক্সা, ভ্যান গাড়ী, মিশুকসহ ছোট ছোট যান। ফলে হতাহত হচ্ছে যাত্রীরা। বৃস্টির পানি-কাদায় একাকার সড়কটি। দিন দিন এসব খানাখন্দ বড় আকার ধারণ করছে। কাদাপানিতে ছিটকে কাপড়চোপড় নষ্ট হচ্ছে পথচারীদের। এমন দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ।
এ চিত্র ঢাকা- নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের পঞ্চবটী মোড় থেকে লোহার মার্কেট পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার অংশের। স্থানীয় ব্যক্তিরা সড়কটি সংস্কারের বারবার দাবি জানালেও তা হচ্ছে না।
রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের পঞ্চবটী মোড়স্থ যমুনা স্টিল মিলের সামনে থেকে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের শুরু হয়েছে। সেখান থেকে লোহার মার্কেট পর্যন্ত এই খানাখন্দ ও বড় বড় গর্ত। বেরিয়ে পড়েছে ইটের খোয়া ও বালু-পাথর। সেখানে জমে আছে পানি।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আগে সড়কটি ভাঙাচোরা হলেও অতটা মন্দ ছিল না। চলতি বর্ষায় খানাখন্দগুলো বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। পঞ্চবটী মোড় থেকে লোহার মার্কেট পর্যন্ত প্রায় ৫-৬ শত মিটার সড়কে ছোট- বড় অন্তত ১৫-২০ গর্ত। একেকটি ১ থেকে ২ ফুট পর্যন্ত কোন কোন ক্ষেত্রে তারও বেশী গভীর হবে। যানবাহনগুলো চলছে ঝুঁকি নিয়ে। কখনো সিএনজি,ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক,মিশুক,অটো রিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যান উল্টে যাচ্ছে।
ট্যাংকলড়ী এসোসিয়ানের ফতুল্লা থানা শাখার সাধারন সম্পাদক মিলন জানান,সড়কটি চলাচলের অনুপযোগি হয়ে উঠলেও জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে স্কুল- কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সহ সকল শ্রেনীর পেশাজীবি মানুষদের।এ সড়কে চলতে গিয়ে গাড়ীগুলোর ফিটনেস প্রতিনিয়ত দূর্বল হয়ে পরেছে।সরকার চায় গাড়ীর ফিটনেস তার আগে সরকারের উচিত গাড়ী চলাচলে রাস্তার ফিটনেস নিশ্চিত করা।
এনায়েত নগর ইউনিয়নে বাসীন্দা ও ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান লিটন জানান,এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে তার ব্যক্তিগত ব্যবহৃত গাড়ীর যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়েছে। যা সারাতে ৬০ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। বড় বড় গর্তের ভিতর গাড়ী পরে গিয়ে বিভিন্ন পার্টস ভেংঙ্গে যায়। একই সাথে খুবই ধীর গতিতে চলে সকল যানবাহন। এতে করে জ্যাম লেগেই থাকে। সড়কটি ভোগান্তির অপর নাম বলে তিনি জানান।
ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী জানান, এই সড়কে বেশ ঝুকি নিয়ে মানুষ চলাচল করে। বড় বড় গর্তের কারনে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জ্যাম লেগেই থাকে। সামান্য পথ পাড়ি দিতে জ্যামে আটকে থাকতে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এনায়েত নগর ইউনিয়ন পরিষধের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান জানান,শুধু মাত্র এই সড়কের এটুকুই নয় ঢাকা – নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের পোস্তগোলা থেকে শুরু করে চাষাড়া পর্যন্ত খানাখন্দে ভরা। তবে পঞ্চবটী মোড় থেকে লোহার মার্কেট পর্যন্ত সড়কটি চলাচলের জন্য খুবই বিপদজনক হয়ে উঠেছে। খানাখন্দ বা গর্তে পরে প্রতিদিনই ঘটছে দূর্ঘটনা। যানবাহন এবং মানুষের উভয়ের ক্ষতি হচ্ছে। সড়কটি ভৌগোলিক দিক দিয়ে এনায়েতনগর ইউনিয়ন আওতাভুক্ত বলে তিনি জানান।
তিনি আরো জানান, সড়কটির পাশ দিয়ে একটি খাল গিয়েছিলো যা কাললিয়ান্দি খালের সাথে গিয়ে মিশেছিলো। সেই খালটি ভরাট করে জেলা পরিষধ তাদের আওতায় নিয়ে গেছে। খালটি ভরাটের সময় নিচে যে পাইপ দিয়েছিলো তা হয়তো কাজ করছেনা
একই সাথে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃস্টি হলে পানি সড়কটিতে জমে থাকে। তিনি ড্রেনেজ সিস্টেমের পাশাপাশি খালটি পুনরুদ্ধারে সরকারের প্রতি আহবান জানান একই সাথে সড়কটি দ্রত সংস্কারের দাবী জানান।
জানা যায়, এ সড়কটি নারায়নগঞ্জ শহরে প্রবেশের অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠানের নগরী বলে খ্যাত বিসিকে ও প্রবেশ করার সড়ক। তাছাড়া শহরে অবস্থিত হাসপাতাল,স্কুল,কলেজে যাতায়াতের ফতুল্লা -পাগলা বাসীর একমাত্র পথ হচ্ছে এই সড়কটি। অতিবগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঝুকি নিয়ে লাখ লাখ মানুষ চলাচল করছে।