রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জে ঈদুল আজহার দিনে পশু কোরবানির পর নগর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। সকাল থেকে ২৭টি ওয়ার্ডে একযোগে এ কার্যক্রম শুরু করে সিটি কর্পোরেশনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিভাগ। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও বিভিন্ন জীবাণুনাশক ব্যবহার করে প্রতিটি ওয়ার্ডের পাড়া-মহল্লাগুলোতে প্রথমে পানি দিয়ে কোরবানির জবাইকৃত পশুর রক্ত পরিষ্কার করছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। পরে তারা পশু জবাইয়ের স্থানে জীবাণুনাশক ও ফোম স্প্রে করে পরিষ্কার করে দিচ্ছেন। একই সঙ্গে ছোট ছোট ট্রলির মাধ্যমে বর্জ্য তুলে নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব গাড়িতে করে সেগুলো নগরীর বাইরে ময়লার ভাগাড়ে নিয়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
সকাল থেকে এই কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. আবুল হোসাইন ও আলমগীর হিরণ। পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ও কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররাও এই পরিচ্ছন্ন কাজে তাদের সহায়তা করছেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে ঈদের দিন থেকে তৃতীয়দিন পর্যন্ত যারা পশু কোরবানি করবেন তাদের বাড়িতে আমাদের কর্মীরা বর্জ্য নিষ্কাশনের কাজ করে দেবেন। রক্ত পরিষ্কার ও বর্জ্য অপসারণসহ পুরো ওয়ার্ডকে পরিপূর্ণভাবে পরিষ্কার করার ব্যাপারে আমরা তৎপর রয়েছি।
তিনি বলেন, এলাকা দুর্গন্ধমুক্ত করা সহ সন্ধ্যার মধ্যেই আমার ওয়ার্ডবাসী যাতে স্বস্তিতে বাইরে চলাচল ও ঈদ উদযাপন করতে পারেন সে ব্যাপারে আমি সবাইকে নিশ্চিত করেছি।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তারা আবুল হোসাইন জানান, ‘২৭টি ওয়ার্ডে ৫০টি ট্রাক ও ৫ শতাধিক ট্রলি নিয়ে ১ হাজার ৭শ’ পরিচ্ছন্নতা কর্মী নগরী পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ করছেন। তারা আশা করছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব বর্জ্য অপসারণ করে নগরী সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব হবে।’
নগর পরিচ্ছন্ন করতে সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর কঠোর নির্দেশনা অনুযায়ী সেই লক্ষ্য নিয়েই তারা কাজ করছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় কোরবানিকৃত পশুর চামড়াগুলো স্থানীয় মাদ্রাসায় দান করাসহ কেউ কেউ যে যার মতো করে বিক্রি করে দিচ্ছে। দানকৃত চামড়া বুঝে নিতে মাদ্রাসার লোকজন নগরীর ২৩টি স্পট থেকে চামড়া সংগ্রহ করে সেগুলো চাষাঢ়ায় বঙ্গবন্ধু সড়কে মজুদ করেছে। একই সঙ্গে চামড়াগুলো ট্যানারিতে সরবরাহের জন্য প্রস্তুত করে ট্রাকেও তোলা হচ্ছে। বিকেল ৫টা নাগাদ এই দৃশ্য দেখা গেছে। এমন অবস্থা বিরাজ করছে নগরীর আরও বেশ কিছু এলাকায়।
নগরীর আমলাপাড়া রহমত উল্লাহ মাদ্রাসার হিসাবরক্ষক মো. জাকির হোসেন জানান, ‘বিকেল ৩টা নাগাদ সাড়ে ১১’শ চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহকৃত চামড়াগুলো নির্ধারিত এজেন্টদের মাধ্যমে রাজধানির ট্যানারিতে পৌঁছে দেওয়া হবে। কোরবানির পশুর চামড়া গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি সংগ্রহ হলেও দামের ব্যাপারে ট্যানারি থেকে এখনও নিশ্চিত করে জানানো হয়নি। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ চামড়া ক্রেতাদের কাছে ন্যায্য দামই আশা করছেন।’
তিনি বলেন, ‘গত বছর ছোট বড় চামড়া গড়ে প্রতিটি ৫৭৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়েছিল। এ বছর দামের ব্যাপারে তাদের এখনও নিশ্চিত করে না বলায় তারা অনিশ্চয়তায় রয়েছেন।’